সমপ্রেম থেকে বেরিয়ে আসতে পরিবারের সদস্যদের মানসিক চাপেই আত্মঘাতী হয়েছেন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। এমনই দাবি করেছে নিহতের সঙ্গী বান্ধবী। দাবি প্রমাণে ২ জনের ব্যক্তিগত কিছু ছবিও প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি। গ্রামীণ এলাকায় এই ঘটনা নিয়ে অত্যন্ত সাবধানে পা ফেলতে চাইছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
গত ১ ডিসেম্বর হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাট্টা গ্রামে নিজের ঘর থেকে উদ্ধার হয় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। পরিবার অভিযোগ করে, ছাত্রীর এক বান্ধবীর বাবা তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন। ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। তাতেই উঠে আসে সমপ্রেমের তত্ত্ব।
ছাত্রীর বান্ধবীর বাড়ি বিহারে। পড়াশুনোর জন্য হরিশ্চন্দ্রপুরে থাকতন তিনি। বান্ধবী জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর ধরে তাদের মধ্যে সমপ্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুজনে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের তরফে সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এর পর তিনি এক যুবকের সঙ্গে কলকাতায় পালিয়ে যান। দমদমে একটি মেয়েদের হস্টেলে থাকতে শুরু করেন। ঠিক ছিল দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী কয়েকদিন পরে কলকাতায় যাবেন। কিন্তু এর মধ্যে থানার দ্বারস্থ হন পলাতক যুবতীর বাবা। পুলিশ দমদম থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। অভিযোগ, এর পর থেকেই মেয়েকে পালাতে প্ররোচনা দিয়েছে এই অভিযোগে দ্বাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে মানসিক নিপীড়ন করছিলেন যুবতীর বাবা।
যুবতী জানিয়েছেন, ‘দু’বছর আগে আমাদের পরিচয় হয়। আমার সঙ্গে ও একই স্কুলে পড়ত। আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্বামী - স্ত্রীর মতো সম্পর্ক। আমরা একসঙ্গে থাকতে ভালোবাসতাম।’
যুবতীর বাবা জানিয়েছেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বান্ধবীর মাকে জানিয়েছিলাম। তার পর মেয়েকে বিহারে নিয়ে আসি। আমার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে ও হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ২ বার মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে আসে। এর পর আমার মেয়ে পালিয়ে যায়। দুজনের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দেখেছি। হরিশ্চন্দ্রপুরে গিয়ে দেখেছি ওরা ঘরে দরজা বন্ধ করে একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছে। আমি দরজায় ধাক্কা দেওয়ার ১০ মিনিট পর দরজা খুলত। ওদের মধ্যে স্বামী - স্ত্রীর মতো সম্পর্ক ছিল। দুটো মেয়ের মধ্যে এমন সম্পর্ক থাকতে পারে একথা কখনো ভাবতে পারিনি।’
যদিও আত্মঘাতী ছাত্রীর পরিবার যাবতীয় দাবি অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ থেকে বাঁচতে মিথ্যা কথা বলছেন বান্ধবী ও তাঁর বাবা।