আগামীকাল, ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে অবশেষে খুলতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলি। তবে, আপাতত শুধুমাত্র নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখনই চালু হচ্ছে না প্রাথমিক বিভাগ। ইতিমধ্যে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে একাধিক নিয়মবিধি জারি করেছে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলি। কিন্তু রাজ্যের একাধিক স্কুলের এক সিদ্ধান্ত নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক।
অভিযোগ, রাজ্যের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির বেসরকারি স্কুল মুচলেকা দিয়েছে— ‘ছাত্র–ছাত্রীদের যদি করোনা হয়, সেই দায়িত্ব স্কুল নেবে না’। এই মর্মে মুচলেকাকে অমানবিক ও দায়বদ্ধতা এড়ানোর চেষ্টা বলে মনে করছেন রাজ্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। স্বাভাবিকভাবেই এতে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। স্কুল কর্তৃপক্ষের সাফাই, অভিভাবকদের সতর্ক করতেই এই ধরণের মুচলেকা দেওয়া হয়েছে। যদিও এতে ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের একাংশ।
অভিভাবকদের কথায়, দিনের অনেকটা সময় স্কুলে কাটাবে ছাত্রছাত্রীরা। করোনার আগেও কোনও পড়ুয়ার চোট লাগলে, অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিভাবকদের খবর দেওয়ার পাশাপাশি তার প্রাথমিক চিকিৎসা করার দায়িত্ব স্কুলেরই থাকে। সেভাবেই করোনা–কালে স্কুলেরও একটা দায়িত্ব থাকে স্যানিটাইজেশন, দূরত্ববিধির মতো নিয়ম কঠোরভাবে কাজে লাগিয়ে সংক্রমণ আটকানোর চেষ্টা করার। কিন্তু সে সবের আগেই এই মুচলেকা দিয়ে কিছু স্কুল হাত তুলে নিচ্ছে বলে মনে করছেন অভিভাবকদের একাংশ।
পাশাপাশি এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলার বিদ্বজ্জনেরাও। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী থেকে কৌশিক সেনের মতে, স্কুলগুলির এই সিদ্ধান্ত ‘অমানবিক এবং দায়বদ্ধতা এড়ানোর চেষ্টা’। এতকিছুর পরও স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান যে কোথা থেকে করোনা হচ্ছে তা তো আর জানা থাকে না। তাই অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন করার লক্ষ্যেই এই মুচলেকা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের স্কুলগুলি খোলার ব্যবস্থা নিতে বলে কর্তৃপক্ষকে। দিন ঠিক করা হয় ১২ ফেব্রুয়ারি। সে মতোই রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে চলেছে স্যানিটাইজেশনের কাজ। কোভিড বিধি মেনেই ক্লাস করানোর কথা জানিয়েছে স্কুলগুলি। আর এ সবের মধ্যে নতুন এই মুচলেকা নিয়ে তৈরি হল বিতর্ক।