বিষক্রিয়ার জেরে কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই তথ্য মিলেছে বলে দাবি করল পুলিশ। শনিবার ফের কালিয়াগঞ্জে উত্তেজনা ছড়ানোর মধ্যেই পুলিশ সূত্রে খবর, ধর্ষণ বা গণধর্ষণ হয়েছে কিনা, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। সেইসঙ্গে পুলিশের দাবি, নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাবার সঙ্গে এসে এক অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
শুক্রবার একটি পুকুরের কাছ থেকে ১৭ বছরের এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কালিয়াগঞ্জ। পরিবারের দাবি, তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন নাবালিকার পরিবারের সদস্যরা। একই দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি। উত্তর দিনাজপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পথে নেমেছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে। যদিও আপাতত সেই পথে হাঁটেনি রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: রাজ্যে নাবালিকাদের নিরাপত্তা উদ্বেগজনক, জানালেন NCPCR-এর চেয়ারম্যান
তারইমধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সানা আখতার দাবি করেছেন, পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে নাবালিকার মৃতদেহের ময়নাদতন্ত করেছে তিন সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল। পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের যে প্রাথমিক রিপোর্ট এসেছে, তাতে মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিষক্রিয়ার উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ধর্ষণের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার।
নাবালিকার মৃতদেহ কি টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে?
নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনায় যখন কালিয়াগঞ্জ উত্তাল হয়ে উঠেছে, তখন একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ওই ভিডিয়োর প্রেক্ষিতে দাবি করা হয়েছে যে পুলিশ রাস্তা দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নাবালিকার মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছে। যা নিয়ে তুমুল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে তিনদিনের মধ্যে ওই ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে জাতীয় মহিলা কমিশন।
তবে বিষয়টি খোলসা করে বলতে চাননি পুলিশ সুপার। তিনি বলেছেন, ‘সেইসময় যা পরিস্থিতি ছিল, তাতে আমরা গ্রামবাসী ও স্থানীয় লোকেদের আমরা বলেছিলাম যে আমরা দ্রুত মৃতদেহ নিয়ে যেতে চাইছি। কারণ তদন্তের জন্য আমাদের প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে। সেজন্য অনেকবার অনুরোধ করা হয়েছিল। আমরা বাধা হওয়ায় মুদৃ লাঠিচার্জ করা হয়। তারপর আমরা হাসপাতালে মৃতদেহ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলাম। অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে হাসপাতালে দেহ পাঠানো হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে পুলিশের DG-কে চিঠি জাতীয় মহিলা কমিশনের, ৩ দিনের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ
সেইসঙ্গে পুলিশ সুপার দাবি করেছেন, ঘটনার সময় যেরকম পরিস্থিতি ছিল, তা বিবেচনা করেই যাবতীয় কাজ করেছে পুলিশ। তবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার।
২ জনকে গ্রেফতার পুলিশ
পুলিশ সুপারের দাবি, নাবালিকার পরিবারের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে মূল অভিযুক্ত-সহ দু'জনকে প্রাথমিকভাবে আটক করা হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগ জমা পড়তে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পেশ করা হয়। ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
সেইসঙ্গে পুলিশ সুপার দাবি, বাবার সঙ্গে এসে আত্মসমর্পণ করেছে এক অভিযুক্ত। আপাতত তদন্তের (ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিকের নেতৃত্বে তদন্ত হচ্ছে) ক্ষেত্রে যাবতীয় দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনমতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারা চাপানো হবে।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)