অনলাইনে ভ্যাকসিনের স্লট বুক করার ক্ষমতা নেই তাঁদের। অনেকের পরিবারে নেই কোনও স্মার্টফোন। যার ফলে ভ্যাকসিনের স্লট বুক করতে যেতে হচ্ছে সাইবার কাফেতে। সেখানে সকাল থেকে লাইন দিয়েও মিলছে না ভ্যাকসিনের স্লট। ওদিকে টিকাকরণ না হলে ভিনরাজ্যে কাজে ফিরতে পারছেন না মালদার পরিযায়ী শ্রমিকরা। কাজ হারানোর আতঙ্কে ভুগছেন তাঁরা।
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, অনলাইনে ভ্যাকসিনের স্লট বুক করার ক্ষমতা নেই তাঁদের। অনেকের কাছে নেই স্মার্টফোনও। তাই টিকার স্লট বুক করতে সাইবার কাফেতে ছুটছেন তাঁরা। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে কখনো শুনতে হচ্ছে ‘স্লট শেষ’। আবার কখনও সার্ভারে সমস্যা।
পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রশ্ন, ভিনরাজ্যে কাজে যেতে গেলে যখন টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। তাহলে সুষ্ঠু ব্যবস্থা কেন করছে না সরকার?
যদিও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমলকৃষ্ণ মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘হরিশ্চন্দ্রপুরে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যা সিস্টেম তার মধ্যেই দিতে হবে। অনলাইনের কিছু সমস্যা হলে তাতে তো আমাদের কিছু করার নেই’।
আফসানা খাতুন নামে এক পরিযায়ী শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের সবার কাছে তো স্মার্টফোন নেই। তাই কম্পিউটারের দোকানে আসছি। ২০ দিন ধরে এসে রোজ ঘুরে যাচ্ছি। এলেই বলে বুকিং শেষ হয়ে গেছে। এদিকে ভ্যাকসিন না পেলে কাজের জায়গায় ফিরে যেতে পারছি না’।
সোহেল নামে আরেক পরিযায়ী শ্রমিক বলেন, ‘১৫ দিন ধরে ঘুরতে হচ্ছে বুকিং করতে এসে। বাইরের মানুষেরা এসে পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা পাচ্ছি না। ভ্যাকসিন না পেলে ট্রেনে উঠতে পারব না। কাজের জায়গায় তো যেতে হবে। সরকারের উচিত ব্যাপারটা দেখা’।
মিজানুর রহমান নামে এক পরিযায়ী শ্রমিকেরও একই অভিযোগ, ‘বুকিং করতে আসছি। মোবাইলে ওটিপি আসছে কিন্তু বুকিং হচ্ছে না। আমার স্ত্রীর ভ্যাকসিন হয়ে গেছে। কিন্তু আমার হয়নি। বাইরে কাজ করি। সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রচণ্ড’।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমলকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সমগ্র হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে আটটি সেন্টার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে। আজকে সাড়ে আট হাজার ডোজ আবার ঢুকবে। কিন্তু যেটা নিয়ম বা সিস্টেম তার মধ্যে থেকেই তো দিতে হবে। এবার অনলাইনে কিছু সমস্যা হলে তা নিয়ে তো আমরা বলতে পারব না। জেলার নির্দেশ অনুযায়ী সমস্ত কাজটা হচ্ছে।"