জমি আন্দোলন আর পরিত্যক্ত কারখানার শহরে বিজনেস পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিল রাজ্য সরকার। বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে টাটা গোষ্ঠীকে রাজ্যে কারখানা গড়ার জন্য জমি দিয়েছিল রাজ্য সরকার, কিন্তু জমি অধিগ্রহণের জটিলতা ও কৃষিজীবীদের আন্দোলনে ভেস্তে যায় কারখানা নির্মাণের কাজ। টাটাদের ফেরত যেতে বাধ্য হওয়ায় সিঙ্গুর আন্দোলন রাজ্য রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। অন্যদিকে, প্রতিশ্রুতি পেয়েও শিল্পহীন হয়ে ছিল সিঙ্গুর। সেই সিঙ্গুরের শিল্প পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হতে চলেছে।
রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে একাধিক ছোট,বড় ও মাঝারি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে সেখানে। সিঙ্গুরে এবার একটি নতুন বিজনেস পার্ক তৈরি হতে চলেছে। সিঙ্গুরে কনফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন ২০০ বিঘা জমির ওপর এই পার্ক তৈরির কাজ শুরু করেছে। কী কী থাকবে এই পার্কে? খাদ্য দ্রব্য, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য থেকে ভোগ্য পণ্য, সবই বিক্রি করার পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি।
বিজনেস পার্ক প্রসঙ্গে CWBTA-এর সভাপতি সুশীল পোদ্দার বলেন, এই বিজনেস পার্ক তৈরি হলে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধা পাবেন। বর্তমানে পার্কটি ২০০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হলেও পরবর্তীতে আরও সম্প্রসারণ করার ভাবনা আছে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাটির। এই পার্কে সব ধরনের ব্যবসাকেই তুলে আনা হবে। ব্যবসার পাশাপাশি শ্রমিকদের খাবার ও থাকার ব্যবস্থার পাশাপাশি তাদের সন্তানদের জন্য স্কুলেরও ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও জানান, প্রকল্পটি উন্মোচনের প্রথম দিনেই ৬০ শতাংশ বুকিং শেষ। লাইসেন্স ও এনওসি-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের জন্য একটি অফিসও থাকবে এই বিজনেস পার্কে। সোমবার থেকে ক্যাম্প শুরু হবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর।
CWBTA-তে সোমবার থেকে রাজ্য সরকারের চালু করা MSME-এর অধীনে একটি শিবিরও আয়োজন করবে। রফি আহমেদ কিদওয়াই প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে সোমবার,৭ অগস্ট থেকে ১৮ অগস্ট পর্যন্ত চলবে এই ক্যাম্প। সব মিলিয়ে ১৩০ টি সমবায় সংস্থার প্রাঙ্গনে এই শিবিরগুলি অনুষ্ঠিত হবে বলে বিশেষ সূত্রে খবর। এই শিবিরের লক্ষ্য, সরকারি প্রকল্পগুলিকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এই শিবিরগুলিতে, বিভিন্ন বিভাগ যেমন – ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প, তফসিলি জাতি-উপজাতি, সংখ্যালঘু, যুব, ছাত্র, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং অন্যান্য উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধা প্রদান এবং উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্প এবং সরকারি প্রকল্পের অধীনে দক্ষতা প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির তথ্যও থাকবে। বিজনেস পার্ক বাস্তবে কতখানি শিল্পমুখী করে তোলে হুগলি জেলার এই গ্রামীণ অঞ্চলটিকে, তার জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।