নদিয়ার তেহট্টর বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই তদন্ত শুরু করে দিয়েছে দুর্নীতি দমন শাখা। এখন অভিযোগকারীদের ডেকে সাক্ষ্য নেওয়া শুরু করেছে দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা। এবার এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন শাখার অফিসে ডেকে পাঠানো হল নদিয়ার নাজিরপুরের বাঘাডোবা এলাকার বাসিন্দা অলোক সাহাকে। গতকাল তাপস সাহার আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
অলোক সাহার দাবি, তিনি প্রবীর কয়ালের হাতে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলেন। তদন্তকারীদের সামনে প্রবীর কয়ালও টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। সেই টাকা তিনি বিধায়কের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। অলোক বাবু তদন্তকারী অফিসারদের জানিয়েছেন, তার বাবার নাজিরপুরে একটি ছোট্ট সেলাইয়ের দোকান ছিল। ছেলের চাকরির জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিধায়ক। এর জন্য ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু, ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার সামর্থ ছিল না। তাই প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এবং এর জন্য সেই দোকানও বিক্রি করে দিয়েছেন। সম্প্রতি তার বাবা প্রয়াত হয়েছেন। অভাবের সংসারে দোকান বিক্রি করে দেওয়ায় এখন তাদের পক্ষে সংসার চালানো খুবই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তাই তিনি টাকা ফেরত চাইছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রায় আড়াই বছর আগে টাকা দেওয়া হয়েছিল।
অলোক জানান, তিনি গতকাল সকাল দশটা নাগাদ তদন্তকারীদের কাছে হাজির হয়েছিলেন। মুখোমুখি বসিয়ে প্রবীর কয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন যে তিনি টাকা নিয়েছেন এবং সেই সমস্ত টাকা তিনি বিধায়কের হাতে তুলে দিয়েছেন। তদন্তকারীরা তার বয়ান রেকর্ড করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, তাপস সাহা পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন। সেই সময় বিধায়ক থাকাকালীন তিনি চাকরির বহু মানুষের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু, কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি, সেই সমস্ত ব্যক্তিদের টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। এরপরেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রতারিত ব্যক্তিরা চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি দুর্নীতি দমন শাখায় ইমেইল করেছিলেন এবং বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন। তারপরই তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন শাখা। ইতিমধ্যেই প্রবীর কয়াল-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন শাখা। এবার অভিযোগকারীদের একে একে ডেকে পাঠিয়ে তাদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে তাপস সাহার সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।