আজ, রবিবার মেয়েকে প্রাইভেট টিউশনিতে পড়তে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বাবা। কিন্তু বাড়ি ফেরা হল না। কারণ বাড়ি আসার পথে পুলিশের গাড়ি সজোরে ধাক্কা মেরে উড়িয়ে দিল বাবাকে। আর ঘটনাস্থলেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হল। সঙ্গে সঙ্গে দীপাবলির উৎসবে নিভে গেল মেয়ের জীবনে পিতৃস্নেহের আলো। এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল জলপাইগুড়ি।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, পুলিশের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই গাড়ির গতিবেগ ছিল প্রচণ্ড জোরে। যার জেরেই এই পথ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশের গাড়িই যদি এভাবে সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলে তাহলে অন্যান্য গাড়ি তো তীব্র গতিতে গাড়ি চালিয়ে মানুষ মারবেই। পুলিশকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই দাবি তুলে স্থানীয় বাসিন্দা এবং উপস্থিত পথচারীরা কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে জাতীয় সড়কে পথ অবরোধ করেন। তাতে নাকাল হতে হয় অন্যান্য যাতায়াতকারী গাড়ির।
অন্যদিকে এই ঘটনা পর শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়। জাতীয় সড়ক অবরোধে সামিল সদস্য দুলাল রায় বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে ঘটনাটি ঘটে এখানে। মেয়েকে প্রাইভেট টিউশনিতে পড়তে দিয়ে রাস্তার পাশে এসে দাড়িয়েছিলেন সুভাস নগরের বাসিন্ধা শ্যামল রায়। তখনই জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়া একটি বড় ট্রাককে সাদা রঙের পুলিশ লেখা গাড়িটি ধাওয়া করছিল পেছন থেকে। আচমকা সেই পুলিশের গাড়িটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শ্যামল রায়কে ধাক্কা মেরে ছিটকে ফেলে দেয়। আর রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: নৈশপ্রহরীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার বাঁকুড়ায়, রাজ্যসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, খুন নাকি আত্মহত্যা?
তারপর ঠিক কী ঘটল? পুলিশের গাড়ি ধাক্কা মেরে আর দাঁড়ায়নি। সটান ওখান থেকে পলায়ন করে। আর এই পথ দুর্ঘটনার জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। এরপর স্থানীয়রা পুলিশের গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টা করলেও সেটি পালিয়ে যায়। তখনই স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলোড়ন পড়ে যায়। কালীপুজোর দিন এমন মর্মান্তিক ঘটনায় পুলিশের উপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে। এলাকাবাসী এমন ঘটনার জবাব চান। মেয়েটির কাছে এই ঘটনার খবর পৌঁছতে তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েন। দীপাবলির দিনই জীবনের আলো নিভে গেল বলে মনে করছেন সকলে।