গ্রেফতার হয়েছেন। তবে মেজাজে এখনও যেন তিনি 'রাজা'। আজ বসিরহাট আদালতে পেশ করা হয় সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে। আদালতে ঢোকার সময় সাংবাদিরা শেখ শাহজাহানকে অনেক প্রশ্ন করেন। জবাবে শুধুমাত্র আঙুল তুলে না-সূচক ভাবে নাড়াতে থাকেন শেখ শাহজাহান। তাঁর চোখে-মুখে সেই সময় ক্ষোভ স্পষ্ট। এদিকে ধৃত নেতার পিছনে পিছনে আদালতে প্রবেশ করেন পুলিশকর্মীরা। উল্লেখ্য, ইডির ওপর হামলার মামলায় গ্রেফতার করা হয় শেখ শাহজাহানকে। এহেন পরিস্থিতিতে শাহজাহানকে ১৪ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে চান সরকারপক্ষের আইনজীবী। এদিকে রাজ্য পুলিশের তরফে শাহজাহানকে 'প্রভাবশালী' তকমা দেওয়া হয়। এই আবহে শেষ পর্যন্ত শাহজাহানকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠায় আদালত। (আরও পড়ুন: মানলেন 'ভুল', 'প্রশ্ন' ইডিকে নিয়ে, শাহজাহান গ্রেফতারির পর কী বললেন পুলিশ কর্তা?)
আরও পড়ুন: 'ভারতীয়ই নন', ট্রেকারের হেল্পার থেকে 'সন্দেশখালির বাঘ', কে এই শেখ শাহজাহান?
আজ আদালতে শাহজাহানকে ধবধবে সাদা পোশাক পরে হাজির হতে দেখা যায়। তাঁর পায়ে ছিল স্নিকার্স। এদিকে তাঁকে নিয়ে আসা পুলিশকর্মীরা ছিলেন তাঁর 'পিছনে'। মুখে কিছু না বললেও শাহজাহান যেন আঙুল নেড়ে আজ দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা। তবে আপাতত পুলিশি হেফাজতেই থাকতে হবে শাহজাহানকে। তাঁকে জেরা করে এই মামলার তদন্ত করবে পুলিশ।
আরও পড়ুন: এতদিনে নামল 'গলার কাঁটা', শাহজাহানের গ্রেফতারির 'ক্রেডিট' নিতে ঝাঁপ তৃণমূলের
উল্লেখ্য, বিগত ৫ জানুয়ারি থেকে শাহজাহানের খোঁজ চলছিল। তবে এতদিন তিনি অধরা ছিলেন। এরই মাঝে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এই আবহে এখন রাজ্য রাজনীতির সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় সন্দেশখালি। প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি। সেখানে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। কয়েকদিন পরই সন্দেশখালিতে শাহজাহান, তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবু, উত্তমদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হয়। সেই শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্দেশখালিতে সন্ত্রাসের রাজ চালানোর অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মারধর, হুমকি, অত্যাচার, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিল শাহজাহান বাহিনী। পরবর্তীতে উত্তম এবং শিবুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অজিত মাইতিকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে শাহজাহান এতদিন অধরা ছিল।
এরপর গতকাল গভীর রাতে গ্রেফতার হন শাহজাহান। এরপর আজ সকালে বসিরহাট আদালতের লকআপেই শাহজাহানকে রাখা হয়েছিল বলে জানা যায়। এই আবহে বসিরহাট মহকুমা আদালতকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় আজ। আদালতে ঢোকা-বেরনোর প্রায় সব প্রবেশদ্বারে ব্যারিকেড বসানো হয়। এদিকে শাহজাহানের গ্রেফতারির পরই সন্দেশখালিতেও বেড়েছে পুলিশের নিরাপত্তা। একাধিক জায়গায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা।