বেআইনিভাবে খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছিল বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপ। কিন্তু, তারপরেও প্রশাসনের তরফে সেই কচ্ছপ উদ্ধারে কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। এমতাবস্থায় নিজের জমানো টাকা দিয়েই বিলুপ্তপ্রায় দুটি কচ্ছপ কিনে সেগুলিকে বাঁচালেন এক কলেজ ছাত্রী। কচ্ছপগুলিকে শুধু বাঁচালেনই না। সেগুলিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বনদফতরের হাতে তুলে দিলেন। এমনটাই করলেন হুগলির এক কলেজ ছাত্রী। কচ্ছপগুলিকে বাঁচানোর জন্য কলেজ ছাত্রী যে পদক্ষেপ নেন তাতে তিনি বনদফতরের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
আরও পড়ুন: হাওড়া স্টেশনে উদ্ধার ব্যাগ ভর্তি কচ্ছপ, পাচারের আগেই ধরল আরপিএফ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কলেজ ছাত্রীর বাড়ি উত্তরপাড়ায়। কলেজ থেকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় তিনি দেখেন উত্তরপাড়ায় রাস্তার পাশে দুটি বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপ বিক্রি হচ্ছে। ওই কচ্ছপ দুটির মাংস বিক্রি করার জন্য রাখা হয়েছিল। সেগুলির মাংসের যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। এরপর কচ্ছপ দুটিকে বাঁচাতে তিনি নিজের জমানো টাকা দিয়ে সেগুলি কিনে ফেলেন। তিনি ভেবেছিলেন, কচ্ছপগুলি গঙ্গায় ছেড়ে দেবেন। কিন্তু, গঙ্গায় ছাড়া হলে পুনরায় আবার জেলেরা তাদের ধরে ফেলতে পারে। সেই আশঙ্কায় তিনি বনদফতরের ফোন নম্বর জোগাড় করেন। পরে বনদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কচ্ছপের কথা জানান। খবর পেয়ে বনদফতরের আধিকারিকরা ওই ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে কচ্ছপ দুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ওই ছাত্রী জানান, প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন কচ্ছপদুটিকে নদীতে ছেড়ে দেবেন। কিন্তু, সেখানে ছেড়ে দিলে কচ্ছপগুলি আবার জেলেরা ধরে খোলাবাজারে বিক্রি করতে পারেন। তাই তিনি নিজের টাকা খরচ করে কচ্ছপগুলি কিনে ফেলেন। ওই ছাত্রী জানান, কচ্ছপগুলি কিনে নিয়ে যাওয়ার পর বাড়িতে থাকা অ্যাকোরিয়াম রেখে দিয়েছিলেন। তারপরে তিনি বনদফতরকে ফোন করে কচ্ছপের বিষয়ে জানান। দুটি কচ্ছপের মধ্যে এটি জখম ছিল। ওই ছাত্রী সেই কচ্ছপটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কচ্ছপ বিলুপ্ত প্রায় জেনেও বাজারে কেন তা বিক্রি করা হচ্ছে? প্রশাসনের তরফেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। বুধবার রাতে তিনি বনদফতরের হাতে কচ্ছপ দুটি তুলে দেন।
উল্লেখ্য, মাসখানেক আগেই পূর্ব বর্ধমান থেকে ধরা পড়েছিল বেশ কয়েকটি কচ্ছপ। রেল লাইনের কাছে ফাঁকা মাঠে অতি ভারি ওইসব কচ্ছপ ভর্তি ব্যাগ গুলি ম্যাটাডোরে চাপিয়ে নিয়ে পালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। তা বুঝতে পেরেই পুলিশকে খবর দেন এলাকার দুই মহিলা। সেই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসতেই ম্যাটাডোরটি ফেলে পাচারকারীরা চম্পট দেয়।