বঙ্গে জঙ্গলরাজ চলছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্ট করে নন্দীগ্রামের বিধায়ক অভিযোগ করলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সমীক্ষা করতে গিয়ে আইসিডিএস কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী এক দীর্ঘ পোস্টে লেখেন, ‘উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালি-২ ব্লকের বেড়মজুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে ১৭১ নম্বর আইসিডিএস সেন্টারের আইসিডিএস কর্মী শম্পা বসু মজুমদারকে মারধর ও শ্লীলতাহানী করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’ শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হাজী সিদ্দিকী মোল্লার নির্দেশে এবং হাসেম মোল্লা ও বাচ্চু মোল্লার নেতৃত্বে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী এই হামলা চালিয়েছে।’
শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, ‘সন্দেশখালি-২ ব্লকের আইসিডিএস প্রকল্পের শিশু উন্নয়ন প্রকল্প আধিকারিক প্রথমে সন্দেশখালি-২ ব্লকের ব্লক উন্নয়ন কর্মকর্তা (বিডিও)-কে অভিযোগ পত্র পাঠান। উনি অভিযোগ করেন যে ওই আইসিডিএস কর্মীর ওপর কিছু সমাজবিরোধী দুষ্কৃতী চড়াও হয় এবং ওনাকে শারীরিক নিগ্রহ করে। কারণ তারা ওনার সার্ভে রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয়।’
নন্দীগ্রামের বিধায়কের অভিযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর কারা পাবে, সেই তালিকার সমীক্ষা করতে গিয়ে তিনি রাজনৈতিক চাপের কাছে মাথা নত করেননি। দোতলা পাকা বাড়ি থাকা তৃণমূলী নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে মানা করেছেন অথবা প্রকৃত প্রাপ্যদের বাড়ি পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে অযোগ্যদের নাম তালিকাভুক্ত করা থেকে বিরত থেকেছেন। ফলত তৃণমূলী নেতাদের ও তাদের পোষ্য গুন্ডাদের রোষের শিকার হয়েছেন।’
পুলিশ ও বিডিও-র বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করে বিরোধী দলনেতা লেখেন, ‘সিডিপিও সাহেব প্রথমে অভিযোগ জমা দিলেও পরে তৃণমূল নেতাদের ও পুলিশের চাপে তা প্রত্যাহার করে নেন। এর পিছনে বিডিও সাহেবেরও অনুমোদন রয়েছে। কারণ এই ঘটনায় কোনও মামলা দায়ের হয়নি। তৃণমূলী নেতাদের নির্দেশে কাজ করছে পুলিশ ও প্রশাসন। দুর্ভাগ্য, যে একজন মহিলার এই পরিণতিও প্রশাসনিক কর্তাদের বিবেকবোধ জাগাতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গল রাজ চলছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে একজন মহিলা অথচ এ রাজ্যে আজ মহিলারাই সুরক্ষিত নয়। সরকারি নির্দেশ পালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েও ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না।’
রাজ্য সরকারকে তোপ দেগে শেষে শুভেন্দু লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায়, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের একাধিক নির্দেশিকার পরেও এই রাজ্য সরকার ও শাসকদলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা স্বচ্ছতা বজায় রাখতে দিচ্ছে না। এই সরকারের আমলে কি গরিব-প্রান্তিক মানুষের কোনও সুরাহা হবে না?’