কাঁটাতারের বেড়া তাঁকে আটকাতে পারেনি। ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে জিরো পয়েন্টে থেকেও উচ্চমাধ্যমিকে সাফল্যের নজির গড়েছেন জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ী পঞ্চায়েত এলাকার মেয়ে তানজিম হোসেন। পরীক্ষায় ৫০০–এর মধ্যে ৪৭৭ নম্বর পেয়েছে। বড় হয়ে তানজিম শিক্ষিকা হতে চায়। আর পাঁচজনকে যাতে তাঁর মতো শিক্ষাক্ষেত্রে কষ্ট করতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে চায় সে।
ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের ওপারে জিরো পয়েন্টে ছয়টি গ্রামের মধ্যে একটির নাম সিপাইপাড়া। সেই সিপাইপাড়ারই বাসিন্দা তানজিম। বেরুবাড়ী গোমীড়াপাড়া হাই স্কুলের ছাত্রী তানজিম। কাঁটাতার টপকে বাবার সঙ্গে স্কুলে যাতায়াত করত সে। প্রতিদিন স্কুল যাওয়ার পথে বিএসএফের অনুমতি নিয়ে যেতে হত তাঁকে। কখনও কখনও সঙ্গে সঙ্গেই অনুমতি পাওয়া যেত, কখনও আবার অনুমতি পেতে একটু অপেক্ষা করতে হত। পড়াশোনার বিষয়ে বাবা দিলওয়ার হোসেন মেয়েকে কিছুটা সাহায্য করতেন। কিন্তু পরিবারে আর্থিক সঙ্গতি না থাকার কারণে তানজিমের প্রাইভেট টিউশন নেওয়া সম্ভব হয়নি। স্কুলে যা ক্লাস হত, সেই থেকেই তাঁর শেখা।
এদিকে তানজিমের সাফল্যে স্বভাবতই খুশি গ্রামবাসীরা। প্রতিবেশি নুর ইসলাম জানান, ‘তানজিমের সাফল্যের জন্য গ্রামবাসীরা গর্বিত। ওর পাশে থেকে যতটুকু পারব আমরা সাহায্য করে যাব।’ পঞ্চায়েতের এক সদস্য জানান, ‘উচ্চশিক্ষার জন্য পঞ্চায়েতের মাধ্যমে যাতে তাঁর পাশে দাঁড়ানো যায়, সেই চেষ্টাও করা হবে।’ তানজিমের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত স্কুলের প্রধান শিক্ষক নৃন্ময় কুমার রায়। তিনি জানান, ‘খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করে ভালো ফল করেছে তানজিম। আমরা খুব খুশি।’