হোমওয়ার্ক করেনি ছাত্র। শুধুমাত্র এই কারণে তার শরীরে গরম মোম ঢেলে দিলেন গৃহশিক্ষক! চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার সালকিয়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকায়। ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্র। আহত ওই ছাত্রকে প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর আহত ওই ছাত্রকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
অভিযুক্ত ওই গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে গোলাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রের মা। অবশ্য এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ১৪ অগস্টে। সালকিয়ার এক ফুল বিক্রেতার তিন ছেলে মেয়েকে পড়ান অভিযুক্ত শিক্ষক।
নির্যাতিত ছাত্রের পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই গৃহ শিক্ষকের নাম দীপক প্রজাপতি। ঘটনার দিন সন্ধ্যাবেলায় ওই ছাত্রের বাড়িতে পড়াতে গিয়েছিলেন দীপক। ঘটনার সময় বাড়িতে ছাত্রের বাবা-মা ছিলেন না। নির্যাতিত ছাত্রটি তার দাদা ও দিদির সঙ্গে পড়তে বসে। সেই সময়ে ওই শিক্ষক পড়া ধরলে, ছাত্রটি তা বলতে পারেনি। এতেই উত্তেজিত হয়ে যান ওই গৃহশিক্ষক। অভিযোগ উঠে, এরপরই সেই ঘরে রাখা একটি মোমবাতি জ্বেলে গরম মোম ওই ছাত্রের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঢেলে দেন অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক। শুধু তাই নয়, গরম হাতা দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাকা দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার জেরে শিশুটির সারা গায়ে ফোসকা পড়ে যায়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সে।
পরে ওই ছাত্রের বাবা-মা বাড়ি ফিরলে, সমস্ত ঘটনা তাঁদের কাছে খুলে বলে ছাত্রের দিদি ও দাদা। এর পরই তড়িঘড়ি আহত ছাত্রটিকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান ওই দম্পতি। তারপর গোলাবাড়ি থানায় গিয়ে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন তাঁরা। পরদিন ওই শিশুটিকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
এরপর ১৯ অগস্ট গোলাবাড়ি থানায় দীপকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন তার মা। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ ওই পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। বুধবার প্রতিবেশীদের সাহায্যে হাওড়া সিটি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন শিশুটির মা। এরপর কমিশনের নির্দেশে নড়েচড়ে বসে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। তবে ঘটনার তদন্তে নামলেও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ বলে অভিযোগ তাঁদের। অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শিশুটির পরিবার।