পঞ্চায়েত সদস্য–সহ তিন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর খুনের তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ক্যানিং জুড়ে এই হাড়হিম করা খুনের ঘটনায় উঠে আসছে নানা তথ্য। অভিযোগ, ক্যানিং পুলিশের মদতেই গোটা এলাকায় ‘ত্রাস’–এর কারবার ফেঁদে বসেছিল ক্যানিং হত্যাকাণ্ডের মূলচক্রী রফিকুল সর্দার। ধর্মতলা অঞ্চলে এখন কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এই কথা।
ঠিক কী অভিযোগ উঠছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, একশ্রেণির পুলিশের মদতেই ধর্মতলা, জেলেপাড়া, হেড়োভাঙা এলাকায় ‘তোলাবাজি’র সাম্রাজ্য স্থাপন করেছিল রফিকুল সর্দার। ধর্মতলায় পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাঝি, ভূতনাথ প্রামাণিক এবং ঝন্টু মণ্ডল খুনের নেপথ্যেও প্রশাসনের ওই অংশের ‘বড়’ ভূমিকা রয়েছে বলে নিহতদের পরিবারের সদস্যদেরও অভিযোগ। আর সেই ঘটনা যে মিথ্যে নয় সেটার প্রমাণ মিলল ওই ক্যাম্পের পুলিশ আধিকারিককে ‘ক্লোজ’ করার ঘটনায়। বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, ধর্মতলা পুলিশ ক্যাম্পের আধিকারিককে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে।
এখন ঠিক কী অবস্থা তদন্তের? ক্যানিংয়ে খুনের ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও অধরা রফিকুল সর্দার এবং তার শাগরেদ দিলওয়ার হোসেন মণ্ডল ওরফে বাপি, বসিরউদ্দিন শেখ, জালাল আখন্দ এবং এবাইদুল্লা শেখ। তবে ৬-৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জেরা করেই মূল অভিযুক্তদের নাগাল পেতে চাইছে পুলিশ। গঠন করা হয়েছে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)। নমুনা সংগ্রহে এদিন অকুস্থলে যান ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। পুলিশ সুপার পুষ্পা জানান, অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়েছে। জেলার সমস্ত থানা এবং নজরদারি বাড়ানো হয়েছে হাওড়া, শিয়ালদহ ও শালিমার স্টেশনেও।
কে এই রফিকুল সর্দার? সূত্রের খবর, এলাকায় তোলাবাজ বলেই পরিচিত রফিকুল। ইদানিং খুন, ডাকাতি করত সে। নিহত পঞ্চায়েত সদস্য স্বপনবাবুর দিদি লক্ষ্মী সর্দারের অভিযোগ, এখানের পুলিশ ক্যাম্পটি ছিল রফিকুলের ‘ঠেক’। এখানে সদলবলে আড্ডা বসাত সে। তাতেই জুটত পুলিশের প্রত্যক্ষ ‘মদত’। ধর্মতলার এক এসইউসি নেতার ‘হাত’ ছিল রফিকুলের মাথায়। পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় ইটভাটা থেকে অটোস্ট্যান্ড সর্বত্র তোলাবাজি চালাত রফিকুল ওতার দলবল। রফিকুলের দলবল ইভটিজিং করত স্থানীয় গৃহবধূ থেকে যুবতী–কিশোরীগদের।