স্বেচ্ছায় যাননি তাঁরা। মাথায় বন্দুক ধরে তাঁদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল তৃণমূলি দুষ্কৃতীরা। রবিবার বাড়ি ফিরে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন পঞ্চসায়রের সোনালি পার্ক থেকে অপহৃত জয়ী ৫ বিরোধী প্রার্থী। জানালেন, এই কয়েকদিনে একাধিকবার তাঁদের ডেরা বদল করা হয়েছে। হুমকি দিয়ে বলতে বাধ্য করা হয়েছে, তাঁরা স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছিলেন। এমনকী পুলিশের সামনে সাদা কাগজে সই করানো হয়েছে তাঁদের।
রবিবার সকালে বাড়ি ফেরেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী চার প্রার্থী। গত বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা লাগোয়া পঞ্চসায়রের সোনালি পার্কে একটি ভাড়াবাড়িতে আত্মগোপন করে ছিলেন তাঁরা। সেখানেই বৃহস্পতিবার রাতে কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধানের নেতৃত্বে দুষ্কৃতীদল হানা দেয়। ৩ বিজেপি প্রার্থী ও ১ বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ করে তারা। অভিযোগ, ঘটনার কথা জানিয়ে রাতেই থানায় বাম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় অভিযোগ জানাতে গেলেও নেওয়া হয়নি। পরদিন সকালে সংবাদমাধ্যমে অপহরণের সিসিটিভি ফুটেজ দেখালে চক্ষুলজ্জার খাতিরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
শনিবার পুলিশের তরফে জানানো হয়, কেউ অপহৃত হননি। ওই চার প্রার্থী নিজেদের ইচ্ছাতেই ভাড়াবাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করেছেন। বেলা বাড়লে চারজনের স্বীকারোক্তি সহ ভিডিয়োও প্রকাশ্যে আসে। তাতে তাঁরা দাবি করেন, তাঁর স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছেন এবং ভালো আছেন। যদিও রবিবার সকালে বাড়ি ফিরে সম্পূর্ণ উলটো কথা জানালেন অপহৃত প্রার্থীরা।
কমলা মণ্ডল নামে অপহৃত এক প্রার্থী বলেন, ‘আমাদের বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ করা হয়েছিল। তৃণমূলি দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে আমাদের তুলে নিয়ে যায়। ভোর রাতে একটি গেস্ট হাউজের সামনে গাড়ি থামে। সেখানে আমাদের ঢুকিয়ে খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা কেউ খাইনি। সেখান থেকে আমাদের আরেকটি গেস্ট হাউজে নিয়ে গিয়ে এক রাত রাখা হয়। শনিবার রাতে সেখানে সাদা পোশাকে ১৪ – ১৫ জন পুলিশের দল আসে। আমাদের সেখানে সাদা কাগজে সই করতে বাধ্য করা হয়। এর পর সেখানে আমাদের শিখিয়ে দেওয়া বুলি বলতে বাধ্য করা হয়। সেই বক্তব্য ভিডিয়ো রেকর্ড করে আমাদের বয়ান বলে প্রচার করা হয়েছে।’
তাঁর সংযোজন, ‘রবিবার ভোর পৌনে ৬টা নাগাদ একজন এসে আমাদের বলেন। ঘরে যাও। তার পর গাড়ি করে আমাদের পৌঁছে দিয়ে যায়।’