পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্ব পেয়ে এখন তিনি বিরোধী দলনেতার গড়ে চষে বেড়াচ্ছেন। আর একের পর এক তথ্য তুলে ধরছেন সবার সামনে। তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা স্কুলকে না দিয়ে নয়ছয় করা হয়েছে বলে দু’দিন আগেই প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। এবার হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যুৎবিহীন দুই গ্রাম বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুরে গিয়ে অবাক হয়ে পড়লেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এতদিন বাম শাসনে এবং অধিকারী পরিবারের রাজত্বে কোনও কাজ হল না!
ঠিক কী জানা যাচ্ছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামের ঘরে পৌঁছে গিয়েছে বিদ্যুৎ এবং জল। সেখানে ব্যতিক্রম হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর গ্রাম। এখানে স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ। আর তা দেখেই অবাক হয়ে পড়েছেন কুণাল ঘোষ। নিজেই প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে এতদিন বামেরা এবং অধিকারীরা কী কাজ করল? রাজ্যের প্রতিটি কোণায় যখন উন্নয়ন পৌঁছে যাচ্ছে সেখানে এখনও হ্যারিকেনের আলোয় দিনযাপন করতে হচ্ছে বন্দরশহরের বাসিন্দাদের। বিদ্যুৎ পেতে বাম নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। পরে শুভেন্দু অধিকারীর কাছেও দরবার করেন তাঁরা। কিন্তু গ্রামে বিদ্যুৎ এল কই?
ঠিক কী বলছেন কুণাল ঘোষ? রবিবাসরীয় সকালে দু’টি গ্রামে যান এই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। সেখানে গিয়ে বিদ্যুতের সমস্যার কথা গ্রামবাসীদের থেকে জানতে পারেন। তখন কুণাল ঘোষ বলেন, ‘ভাবা যায়? দু’টি গ্রাম। স্বাধীনতার পর থেকে এখনও বিদ্যুৎ আসেনি। হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর। দীর্ঘ বাম জমানা এবং পরে অধিকারীরাজ। বারবার আবেদন নিষ্ফলা। কাল সন্ধ্যেবেলা কাঁথি থেকে হলদিয়া এসেছি। মাখনবাবুর বাজার মোড়ে বসে চা খাচ্ছিলাম। নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, দুই গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। রাস্তাও খারাপ। শুভেন্দু এবং শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ। তারপর গ্রামে গেলাম। এখানের অন্যত্র বিদ্যুৎ আছে। সবুজ গ্রাম, একাধিক পুকুর, শান্ত সুন্দর লাগল। তবে এখানে যুগে যুগে সবাই শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এবার দেখা যাক কী করা যায়।’
উল্লেখ্য, গতকাল কাঁথিতে সভা করতে এসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গ্রামের মানুষজনের সঙ্গে কথা বলার পর পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং অঞ্চল সভাপতিকে বরখাস্ত করেন তিনি। আর এবার এই ঘটনা নিয়ে টুইট করে শোরগোল ফেলে দিলেন কুণাল ঘোষ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুরে বিদ্যুৎ পৌঁছয় কিনা সেটাই এখন দেখার।