সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার প্রাক্কালে কিছুতেই থামছে না তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল। আবার ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংকে কড়া ভাষায় বিঁধলেন জগদ্দলের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। তাঁদের মধ্যে বহুদিন ধরে আকচা–আকচি লেগেই রয়েছে। এই আবহে দল ছেড়েছেন দমদম ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তাপস রায়। আর আবার তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা গেল ব্যারাকপুরে। এখান থেকে অর্জুন সিংকে তৃণমূল কংগ্রেস যাতে প্রার্থী না করে তার জন্য জগদ্দল বিধানসভার মামুদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাধারণ মানুষের সই সংগ্রহ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম।
এদিকে নাম না করে বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের অভিযোগ, নিজের ছেলেকে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বসিয়ে চক্রান্ত করছেন। আবার সেই তিনিই ব্যারাকপুর লোকসভায় টিকিট পাওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়–অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়র সঙ্গে বসছেন। জগদ্দল বিধানসভার মামুদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের থেকে যখন সই সংগ্রহ করছেন বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম তখনই আবার আমডাঙা বিধানসভা জুড়ে অন্য ছবি দেখা গেল। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা আবার পোস্টার–ফ্লেক্স ছড়িয়ে দিয়েছেন, ‘অর্জুন সিংকেই প্রার্থী চাই।’ এই দু’রকম পরিস্থিতিতে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: পথবাতিকে সঙ্গী করে পড়াশোনা চলছিল মেয়েটির, তিন ঘণ্টায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিলেন অরূপ
অন্যদিকে আগামী ১০ মার্চ ব্রিগেডে তৃণমূল কংগ্রেসের জনগর্জন সভার প্রস্তুতি হিসাবে এখন সর্বত্র চলছে সভা–সমাবেশ। আর তখনই সোমনাথ শ্যাম বলেন, ‘গত লোকসভা নির্বাচনে যারা শিল্পাঞ্চলে সন্ত্রাস চালিয়েছে তারাই এই নির্বাচনে আবার আসবে। তার পর তারা আবার জামা পালটে অন্য কোথাও চলে যাবে। এই লোকগুলিকে ভুলে যাবেন না। তারা নিজের আখের গোছাতে আসে। নিজেকে বাঁচাতে তৃণমূল কংগ্রেসে দ্বিতীয়বার এসেছে।’ নাম না করলেও এই মন্তব্যগুলিতে কাকে নিশানা করা হচ্ছে সেটা সহজেই অনুমেয়। যদিও আমডাঙার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রফিকুর রহমানের কথায়, ‘মানুষ আবেগতাড়িত হয়ে এই ধরনের পোস্টার দিয়েছেন। আমি দলকে জানিয়েছি কাকে প্রার্থী হিসেবে চাই।’
এছাড়া লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকানোই লক্ষ্য তৃণমূল কংগ্রেসের। সেখানে নাম না করে বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের বক্তব্য, ‘নিজের ছেলেকে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বসিয়ে চক্রান্ত করছে। আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বসছে, যাতে ব্যারাকপুর লোকসভায় তাঁকে দ্বিতীয়বারের জন্য টিকিট দেওয়া হয়। এই ধরনের গদ্দাররা জন্মেছেই গদ্দারি করার জন্য। আজকে এরা সাদা পোশাক পরে আসবে, কালকে দেখা যাবে গেরুয়া পোশাকে। এদের কোন জাত নেই, ধর্ম নেই।’ সুতরাং নিশানা অর্জুনকে লক্ষ্য করেই বোঝা যাচ্ছে। আর বীজপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সুবোধ অধিকারী ভিন্ন সুরে বলেন, ‘অর্জুন সিং আগে ঠিক করুন, কাদের প্রার্থী হবেন? বিজেপির নাকি তৃণমূলের?’