যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা যেন আয়নার সামনে দাঁড় করিয়েছে গোটা বাংলাকে। কাদের প্ররোচনাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের মতো ঘৃণ্য ঘটনা হত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৯জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। তার মধ্য়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন বর্তমান পড়ুয়া ও তিনজন প্রাক্তনী রয়েছেন।
তবে সবার আগে ধরা পড়েছিলেন সৌরভ চৌধুরী। এরপর একে একে অন্য অভিযুক্তদের জালে পোরা শুরু করে পুলিশ। এবার জেনে নিন তাদের পরিচয়।
সৌরভ চৌধুরী- টানা জেরার পরে সৌরভকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আদপে চন্দ্রকোণার বাসিন্দা। গরিব পরিবার থেকে উঠে এসেছিলেন। অঙ্ক নিয়ে এমএসসি পাশ করেছিলেন। মৃত ছাত্রের বাবার মতে এই সৌরভই ছিল হস্টেলের বাবা। এতটাই প্রভাব তার।
দীপশেখর দত্ত- একটি ডায়েরি ও চিঠির সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় দীপশেখরকে। যাদবপুরের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র। যে ডায়েরিটি পাওয়া গিয়েছিল তা মৃত ছাত্রের। সেখানে একটি চিঠি লেখা ছিল। অভিযোগ সেই চিঠি নাকি দীপশেখরের লেখা।
মহম্মদ আরিফ- জম্মুর বাসিন্দা আরিফ। হস্টেলের ১৬ নম্বর ঘরে থাকতেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি নাকি ওই রাতে ওই ছাত্রকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ঘামে ভিজে থাকা হাত পিছলে গিয়েছিল। তবে কি সকলের চোখের সামনেই গোটা ব্যাপারটা হয়েছিল? কারা প্ররোচিত করেছিল এই ঘটনায়?
মহম্মদ আসিফ আফজল আনসারি- ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। বাড়ি আসানসোল। এই ঘটনার সঙ্গে এই হস্টেল আবাসিকের যোগাযোগ দেখা হচ্ছে।
অঙ্কন সরকার- হস্টেলের আবাসিক। বাড়ি নারায়ণপুরের কাদিহাটি এলাকায়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সেদিন ট্যাক্সি করে ওই ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন এই অঙ্কনই।
অসিত সর্দার- দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির বাসিন্দা। ঘটনার পরদিনই হস্টেল ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন। কিছুটা চিন্তাগ্রস্ত ছিলেন। কিছু যেন খুঁজছিলেন। একটা বইয়ের খোঁজ করছিলেন বলে খবর। মাঝে কলকাতাও এসেছিলেন। তবে বেশিক্ষণ না থেকেই বাড়ি চলে যান।
সপ্তক কামিল্যা- এগরার ব্যবসায়ীর ছেলে। যাদবপুরের প্রাক্তনী। কিন্তু ডেরা নিয়েছিলেন যাদবপুরেই। প্রভাব কিছু কম নয়। তবে ঘটনার পরেই পাততাড়ি গুটিয়ে সোজা বাড়ি। সেখান থেকেই পাকড়াও করে পুলিশ।
মনোতোষ ঘোষ- যাদবপুরের সোশিওলজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মনোতোষের অতিথি হিসাবে ছিলেন প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র। আসলে সৌরভের নামে কোনও ঘর ছিল না। সেকারণেই বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল।
সুমন নস্কর- যাদবপুরের প্রাক্তনী। ঘটনার পরেই যাদবপুর থেকে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
তবে এখনও দুজন অভিযুক্ত পলাতক। কিন্তু গোটা ঘটনার পরতে পরতে রহস্য। হস্টেলে কার্যত দাদাগারি চালাতেন প্রাক্তনীরা। প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা যেন তাদের বাড়ির চাকরবাকর। ফাই ফরমায়েশ খাটতে হত।