এবার বিধানসভায় সপাটে শিক্ষা নীতি নিয়ে জবাব দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আজ, মঙ্গলবার বিধানসভার বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি কি গ্রহণ করেছে রাজ্য? এই প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তখন তাঁর প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য় বসু। আর তখনই সপাটে জবাব দিয়ে জানালেন, কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছে, এটা নিয়ে একটি ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে রাজ্য়ের পক্ষে নতুন শিক্ষানীতি তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর জানতে চান, আদৌ কি কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি নিয়ে ভাবছে রাজ্য সরকার? হুমায়ুন কবীরের প্রশ্ন শেষ হতেই জবাবে বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি রাজ্য গ্রহণ করেনি। এই রাজ্যে জাতীয় শিক্ষা নীতি মানা হয়নি। রাজ্য সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতি মেনে নিয়েছে এই নিয়ে একটি ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। কখনই কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতি গ্রহণ করেনি।’ তাহলে স্নাতকস্তরে এই পরিবর্তন কেন? জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এটা শিক্ষানীতির ছোট অংশ। চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু না হলে পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়তেন। তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স রাখলে পড়ুয়াদের স্বার্থের বিরোধী হতো। যা বামেদের সময়ে প্রাথমিক থেকে ইংরেজি তুলে দেওয়ার মতো ব্যাপার।’
অন্যদিকে দেশজুড়ে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করতে জোর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নীতি নিয়ে প্রচুর আপত্তি রয়েছে রাজ্য সরকারের। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক কোর্সের মেয়াদ বাড়িয়ে ৪ বছর করা হয়েছে। স্নাতকস্তরের পাঠ্যক্রমে বদল হয়েছে। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি মেনে নিয়েছে। আজ বিধানসভায় এসব নিয়েই প্রশ্ন তোলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তবে গোটা বিষয়টি খোলসা করে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বসুর কথায়, ‘আমরা খতিয়ে দেখেছি। একটা ছোট অংশ শুধুমাত্র ৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স আমরা গ্রহণ করেছি। জোর করে তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স রেখে দিলে সমস্যায় তো পড়তে হতো ছাত্র–ছাত্রীদের।’
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা দিতে হবে’, বিধানসভায় সরব শুভেন্দু
আর কী উঠে এল? রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জাতীয় শিক্ষানীতি সব কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন। একাধিক উপাচার্যের সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠক করেছেন। শিক্ষাবিদদের রাজভবনে ডেকে আলোচনা করেছেন। সেখানে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্য সরাসরি সংঘাতের বার্তা দিল বলে মনে করা হচ্ছে। তাই ব্রাত্য বসু আজ বিধানসভায় বলেন, ‘একটি বিভ্রান্তমূলক খবর প্রচারিত হচ্ছে। রাজ্য সরকার ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি মেনে নিয়েছে। এটিকে সত্যের অপলাপ বললে কম বলা হবে। রাজ্য একটি আলাদা স্টেট এডুকেশন পলিসি তৈরি করেছে। সমস্ত ‘বেস্ট প্র্যাকটিসেস’কে নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে ইউজিসি। চিন্তাভাবনা বাস্তবায়িত করতে দুটি নতুন পোর্টালও চালু করেছে ইউজিসি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে একমত নয় রাজ্য সরকার।’