শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কয়েকদিন আগে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে শুনানির সময় শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি তৃণমূল কংগ্রেসের স্বীকৃতি প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে।’ বিচারপতির এই মন্তব্যে তুমুল শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যের রাজনীতিতে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রীরা এই নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি। পরোক্ষভাবে অনেক কিছু বলেছেন। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঠিক কী বলেছিলেন বিচারপতি? আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে। তিনি আদালতে হাজির হযে পিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদনে এই শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছে।’ শিক্ষা সচিবের এই মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্য সরকার কীভাবে এরকম বেআইনি কাজ করতে পারে? রাজ্যের মন্ত্রীরা কি আইন জানেন না? এসএসসি’র আইনে কোথায় এভাবে শূন্যপদ তৈরির কথা লেখা রয়েছে? এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাজ্য মন্ত্রিসভা সংবিধানবিরোধী কাজ করেছে।’ তারপরই বিস্ফোরক মন্তব্য করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে তৃণমূলের প্রতীক প্রত্যাহার করতে বলব। দল হিসাবে তাদের স্বীকৃতিও প্রত্যাহারে করে নিতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা খুশি করা যায় না।’
ঠিক কী বলেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ? বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এবার মুখ খুললেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সংবিধান দিবসে বিধানসভায় বিআর আম্বেদকরের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর বিমানবাবু বলেন, ‘বিচারব্যবস্থা তার নিজের কাজ করবে। বিধানসভা কী করবে, আর বিচারব্যবস্থা কী করবে, সংবিধানে সেটা বলা আছে। কেউ হয়ত উত্তেজিত হয়ে কিছু বলেছেন। বিচারপতির প্রকাশ্য বিবৃতি না দেওয়াই ভাল। প্রতীক দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়, এমন কিছু না বলাই ভাল।’
আর রী বলেছিলেন বিচারপতি? তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার মনে হয় এই রাজ্যে গণতন্ত্র সঠিক হাতে নেই। অথবা রাজ্যে গণতন্ত্র বিকশিতই হয়নি। আমি রাজ্য মন্ত্রিসভাকে এই মামলায় পক্ষ করতে নির্দেশ দেব। সবাইকে উত্তর দিতে হবে। শোকজও করতে পারি।’ এই মন্তব্যে বিজেপি অক্সিজেন পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।