কলকাতা পুরসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই বেআব্রু হয়ে পড়ছে বিজেপির অবস্থা। এখনও সেভাবে তাঁদের প্রার্থীরা প্রচারে নামতে পারেননি। এখন তাঁরা পার্টি অফিসেই অভিযোগ জানাচ্ছেন, লোকবল নেই। তাছাড়া টাকাও নেই প্রচারের। পার্টি থেকে প্রত্যেক প্রার্থীকে টাকা দেওয়া হোক প্রচারের জন্য। এই নিয়ে ৬ নম্বর মুরলিধর সেন লেনে হত্যে দিয়ে পড়ে আছেন প্রার্থীরা।
এবার বিজেপি কলকাতা পুর এলাকার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করেছে মুকেশ সিংকে। তিনি এখন দরবার করছেন, লোক নেই, লোক চাই। এই বিষয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এলাকায় ব্যানার–ফেস্টুন লাগাতে পারছি না। প্রচারে আমার লোক পাচ্ছি না। কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। পার্টির নেতাদের বলেছি যাতে দলের কর্মীরা একটু বেশি সংখ্যায় আসে।’ এমন অভিযোগ বহু প্রার্থীর রয়েছে। তবে অজুহাত হিসাবে খাঁড়া করা হচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের ভয়ে এই অবস্থা হচ্ছে।
আবার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়িয়েছেন শরদ সিং। বিধায়কের টিকিট চেয়ে আগে পাননি। এবার পুরসভা নির্বাচনের টিকিট পেয়েছেন দিলীপ ঘোষের দৌলতে। এখানে এসে দেখা গেল, তিনিও বিশেষ প্রচারে নামতে পারছেন না। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি বলেছেন, টাকা নেই। দলকে টাকা দেওয়ার কথা বলেছি। যদিও তিনি ব্যবসায়ী। তিনি কাছের বেশ কয়েকজনকে টাকা দিতে বলেছেন। জিতে গেলে টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। কিন্তু সেই ঝুঁকি কেউ নিতে চাইছেন না। আবার ৭৭ নম্বরের ওয়াটগঞ্জ এলাকায় বিজেপি প্রার্থী করেছে গোপা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ‘লোক পাচ্ছি না, পয়সাও তেমন নেই। কর্মীরা টাকা চাইলে কী বলব! এখন যে ১৫-২০ জন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে থাকছে, তাদের খাবার খরচ দিতে হচ্ছে। এত টাকা কোথায়?’
এই বিষযে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘দ্রুত সবাই প্রচারে নামবেন। ছবিটা শীঘ্রই বদলে যাবে। সকলেই প্রচারে নামবে।’ এই পরিস্থিতি আগেই আঁচ করেছিলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। তাই তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগেই হেরে বসে আছেন এমন হাবভাব দেখা দিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী কমপক্ষে ১০টি ওয়ার্ড জেতার কথা বলেছেন। সুতরাং কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে এখন ছন্নছাড়া অবস্থা গেরুয়া শিবিরের।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেওয়াল লিখনও দেখা যাচ্ছে না। ৮৭ নম্বর ওয়ার্ড গতবার জিতেছিল বিজেপি। সেটা এখন মহিলা ওয়ার্ড। সেখানেও বিজেপিকে প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আবার ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থী গৌরব বিশ্বাসের সঙ্গেই রয়েছেন বেশকিছু পুরনো বিজেপি কর্মীরা। এখানে বিজেপি প্রার্থী রাজর্ষি লাহিড়ী। তাঁকে মেনে নিতে না পেরেই এমন অবস্থা দেখা দিয়েছে।