শারীরিক অবস্থার আরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এবার বাড়ি ফেরার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কারণ সবেমাত্র ১০ শতাংশ কাজ হয়েছে বই লেখার। বাকিটা শেষ করতে হবে। বিট্রিশ ইন্ডিয়ার শাসনকালে সমাজব্যবস্থা নিয়ে বই লিখছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। চোখের সমস্যা ও শারীরিক অসুবিধার জন্য সেই কাজ অসমাপ্ত হয়েই পড়ে রয়েছে। তাই তিনি বাড়ি ফিরতে চান। খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও খবর।
গত বুধবার তাঁকে ভরতি করা হয় উডল্যান্ডস হাসপাতালে। রবিবার হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর শারীরিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। রক্তচাপ, পালস রেট, অক্সিজেনের মাত্রা, কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। বুদ্ধদেববাবু চিকিৎসকদের অনুরোধ করেছেন, তিনি দ্রুত বাড়ি ফিরতে চান। ফোনে কথা বলছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও।
কিন্তু কেন এত তাড়াহুড়ো করছেন বাড়ি ফেরার জন্য? জিজ্ঞাসা করেন চিকিৎসকরা। উত্তরে চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী ও চিকিৎসক সৌতিক পান্ডাবুদ্ধবাবু কে জানান, বই লেখার কাজ দ্রুত শেষ করতে চান তিনি। এই কাজ শেষ করার জন্য মেডিকেল বোর্ডের অন্যান্য চিকিৎসকদের কাছে হাসপাতালেই রেফারেন্স জার্নাল চেয়েছেন তিনি। চিকিৎসকরা যদিও তাঁকে বুঝিয়েছেন, এখনই চোখের কিংবা শরীরের উপর এতটা চাপ নেওয়া ঠিক হবে না। তাই বাড়ি যাওয়াও এখনই ঠিক হবে না।
রবিবার সকালের মেডিক্যাল বুলেটিন অনুযায়ী, রাতে ভালোই ঘুমিয়েছেন তিনি। আপাতত কোনওরকম যান্ত্রিক সহায়তা ছাড়া নিজেই অক্সিজেন নিতে পারছেন। তাঁর রক্তে ৯০ শতাংশের মতো অক্সিজেন রয়েছে। রক্তচাপ স্থিতিশীল। হিমোগ্লোবিন, ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রাও ঠিকই রয়েছে। জ্ঞানও রয়েছে। কথাও বলতে পারছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কথোপকথনের মাধ্যমে প্রয়োজনের কথা সকলকে জানাচ্ছেন বুদ্ধবাবু। মূত্রত্যাগজনিত কোনও সমস্যাও নেই। নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড–সহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। রাইলস টিউবের মাধ্যমেই আপাতত খাওয়াদাওয়া করছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
বর্তমানে বাইপ্যাপ ভেন্টিলেটরি সাপোর্টে রাখা হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট ইতিবাচক এসেছে। আগের থেকে আরও দ্রুতগতিতে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন তিনি। সূত্রের খবর, এভাবে এগোলে আগামী সোমবার অথবা মঙ্গলবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। রবিবার সকালে তাঁর কেবিনে দলের মুখপত্র গণশক্তি কাগজও দেওয়া হয়। শনিবার চিকিৎসকদের কাছে গণশক্তি চেয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রবিবারই তাঁর ক্যাথিটার খুলে দেওয়া হবে।