সম্প্রতি এগরা, বজবজ, মালদহ, দত্তপুকুরের বিস্ফোরণের ঘটনার পর বাজি বাজার বসানো নিয়ে উদ্বিগ্ন বাজি ব্যবসায়ীরা। শনিবার বাজি ব্যবসায়ী সংগঠনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে একাধিক সমস্যার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনেই রয়েছে কালীপুজো এবং দীপাবলি। বছরের এই সময়ে বাজির চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। সেই লক্ষ্যেই বাজি বাজার বসানো নিয়ে এদিন বৈঠক করেন ব্যবসায়ীরা। সেই বৈঠকে একাধিক সমস্যা উঠে এসেছে। যার মধ্যে সবুজ বাজির সরবরাহ এবং বাজি মজুত রাখা নিয়ে সমস্যা আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজি ক্লাস্টারের শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে মাত্র দুদিনের প্রশিক্ষণ
সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি উঠে এসেছে সেটি হল সবুজ বাজি সরবরাহ এবং তা মজুত রাখা। কারণ জাতীয় পরিবেশ আদালত শুধুমাত্র সবুজ বাজির উপরেই ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু, কোথায় থেকে সবুজ বাজির সরবরাহ হবে তা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি রাজ্য সরকার। সম্প্রতি বিস্ফোরণের ঘটনাগুলির পরেই বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি বাজি বিক্রি বন্ধ করতে রাজ্য সরকার তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
সম্প্রতি নবান্নে বৈঠকে উঠে এসেছে রাজ্যে ৫,৫৫৬ টি বেআইনি বাজি কারখানা রয়েছে। তা নিয়ে পরিবেশ আদালতে মামলা হচ্ছে। তবে গোটা রাজ্যে শুধু মাত্র ৭টি সবুজ বাজি তৈরির কারখানা রয়েছে। ফলে এই ৭টি বাজি তৈরির কারখানা থেকে এত পরিমাণ সবুজ বাজি সরবরাহ সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ।
শুধু তাই নয়, বাজি মজুত রাখা নিয়েও বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বাড়িতে কোনওভাবেই বাজি মজুত রাখা যাবে না। বাজি ব্যবসায়ীদের মতে, আগে থেকে বাজি না কিনলে তারা সমস্যাই পড়বেন। কারণ বাজি কিনে আনার পরেই তা সঙ্গে সঙ্গে তা বিক্রি করা যায় না। একটা দিন বাজি কিনতেই চলে যায়। ফলে বাজি মজুত রাখতে হয়। সে ক্ষেত্রে বাড়িতে বাজি মজুত রাখতে না দিলে সমস্যা হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
যদিও বাজে ব্যবসায়ীদের মতে, শিবকাশি থেকে বাজি এনে তা বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু, তা মজুত রাখার তাদের কাছে কোনও জায়গা নেই। আবার বাজি ব্যবসায়ীরা বেআইনি বাজি নিয়েও বসতে পারবেন না। তাঁদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই তারা সবুজ বাজি নিয়ে ব্যবসায় বসেন। কিন্তু পুলিশ অনেক সময় সেগুলি পরীক্ষা করে জানতে পারে তা সবুজ বাজি নয়। এরফলে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। এই অবস্থায় বাজি মজুত রাখার জন্য জায়গার ব্যবস্থার করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যেই তাঁরা এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, পরিবেশ দূষণ এবং প্রাণহানি রুখতে রাজ্যে বাজি ক্লাস্টার তৈরি করছে সরকার। ইতিমধ্যেই জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। তার জন্য খরচ ধার্য করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সবুজ বাজি তৈরির জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার।