ইস্তফা দিতে চলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের ঠিক আগেই বাংলা সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দে তিনি বলেন, ‘আমি খুব শীঘ্রই রিজাইন করতে চলেছি বিচারপতির পদ থেকে। আর আমি সেটা করব মঙ্গলবার। ইস্তফাই আমি দিতে চাই।’ আর ইস্তফার পরে তিনি কী করবেন, সেটাও মোটামুটি জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক ময়দানেই যাব।’ তবে কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন, তা জানাননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সেই দলটা যে তৃণমূল কংগ্রেস নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে কংগ্রেস, বিজেপি, বাম বা অনেক ছোট-ছোট দল আছে, সেইসব দলে যোগদান করলেও করতে পারেন। সেই তালিকায় তৃণমূলের নাম ছিল না। বরং বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ইতিহাসে আমরা মৌর্য সাম্রাজ্যের কথা পড়েছি। এখন চোখের সামনে আমরা চৌর্য সাম্রাজ্যকে দেখছি।’
তাহলে কি কোনও লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করবেন? কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়াই করবেন? সেই প্রশ্নের জবাবে কিছুটা ধোঁয়াশা বজায় রেখেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ওই সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, ‘বৃহত্তর ক্ষেত্রে’ যে তিনি যাচ্ছেন, তা নিশ্চিত। যদি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেন, তাহলে সেই দল যদি তাঁকে টিকিট দেন, তাহলে তিনি ভাবনাচিন্তা করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়।
কিন্তু আচমকা কেন বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন?
ওই সাক্ষাৎকারে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমার মনে হয়েছে যে আমি আদালতে যে কাজটা করি, সেই কাজের সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার অন্তর বলছে সেটা। এখন হয়ত আমায় বৃহত্তর ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে যেতে হবে।’
আর তাঁকে যে 'বৃহত্তর ক্ষেত্রে' যেতে হচ্ছে, সেটার জন্য ‘ক্ষমতাশীল দল’ তৃণমূলকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যখনই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ক্ষমতাশীল দল, তখনই বলা হয়েছে যে আপনি মাঠে আসুন, মাঠে এসে লড়াই করুন। তো আমি ভেবে দেখলাম যে তাঁরা যখন ডেকেছেন এতই করে, এত ধরনের ব্যঙ্গ করেছেন, এত অপমানজনক কথা বলেছেন, তখন তাঁদের ইচ্ছাটা পূর্ণ হওয়ার দরকার।’
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
তৃণমূলের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা বহু আগেই বলেছিলাম যে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একজন রাজনৈতিক বোড়ে। আমাদের অভিযোগকে মান্যতা দেওয়ার জন্য অভিজিৎবাবুকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শিক্ষক নিয়োগ-সহ গোটা দুর্নীতির অভিযোগটাই আজ প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে পড়ল। ভোঁতা হয়ে গেল শেষ দুই-আড়াই বছরের যাবতীয় আলোচনা, সমালোচনা..।'