চলতি মাসের প্রথমে বন দফতরের ‘ঘুমপাড়ানি গুলিতে’ মৃত্যু হয়েছিল এক বুনো হাতির। ঘটনাটি ঘটেছিল ঝাড়গ্রামের বিড়িহান্ডি বিটের কাজলার জঙ্গলে। সেই মামলায় বন দফতরের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। জানা গিয়েছে, ওই হাতিটি গর্ভবতী ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ আগামী ৭ অগাস্টের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে।
আরও পড়ুন: অসমের নওগাঁওয়ে একসঙ্গে ১৮ হাতির রহস্যমৃত্যু, উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ
ঘুমপাড়ানি গুলিতে হাতিটিকে কাবু করে অচেতন অবস্থায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে হাতিটির মৃত্যু হয়। মামলকারীর অভিযোগ, হাতিটিকে অচেতন করার পর নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে নিয়ে যাওয়া হয়নি। সেই কারণে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। সরাসরি হাতির পেট বরাবর ফিতে বেঁধে সেটিকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। সেই কারণে হাতিটির দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ মামলাকারীর। এদিকে, বন দফতরের তরফে আদালতে জানানো হয়, হাতিটিকে প্রথমে পুরুষ ভাবা হয়েছিল। পরে জানা যায় সেটি মহিলা হাতি এবং সেটি গর্ভবতী। তাছাড়া, উন্মত্ত এই হাতির হামলায় তিন-চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও আদালতকে জানান বনকর্তা দেবল রায়। সেই কারণে হাতির চিকিৎসার জন্য ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে গিয়ে সেটির চিকিৎসা করার কথা ছিল। শুধু তাই নয়, হাতিটিকে অচেতন করতে একবার নয়, দু'বার গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে আদালতে জানান বনকর্তা। আগামী ৭ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি সেই সময়ের মধ্যে বন দফতরকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, বারবার জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে এসে হামলা চালিয়েছিল ওই বুনো হাতি। তারপর থেকেই হাতিটিকে ট্র্যাক করা শুরু করেছিল বন দফতর। ঝাড়গ্রামের বিড়িহান্ডি বিটের কাজলার জঙ্গলে ওই হাতিটির অবস্থান লক্ষ্য করে বন দফতর। এরপর বন দফতরের বিশেষজ্ঞ এবং কর্মীরা সেখানে পৌঁছে হাতিটিকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন। কিছুক্ষণের মধ্যে হাতিটি অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর হাতির চোখ বেঁধে গাড়িতে তোলা হয়। সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য হাতিটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল চিড়িয়াখানায়। সেই পথেই হাতিটির মৃত্যু হয়। সাধারণত ঘুমপাড়ানি গুলির ফলে কোনও হাতির মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। তবে কী কারণে ওই হাতির মৃত্যু হল তা জানতে হাতিটির দেহ ময়নাতদন্ত করা হয়।
প্রাথমিকভাবে বন বিভাগের অনুমান ছিল, হাতিটির পেটে আগে থেকেই একটি ক্ষতচিহ্ন ছিল। বনদফতরের দাবি, পরিমাণ মতোই ঘুমপাড়ানির ডোজ দেওয়া হয়েছিল হাতিটিকে। তবে ক্ষত থাকায় ওই হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান বনদফতরের আধিকারিকদের।