রাজ্য সরকারের ওপর ভরসা না করে এবার সরাসরি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থেকে করোনার তথ্য সংগ্রহ শুরু করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেজন্য একটি মোবাইল অ্যাপলিকেশন তৈরি করে ফেলেছে তারা। তাতে করোনা মোকাবিলায় যুক্ত সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক নানা তথ্য পূরণ করবেন। সেই তথ্য একই সঙ্গে পৌঁছে যাবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে।
ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টারের সঙ্গে একযোগে এই অ্যাপ তৈরি করেছে ICMR. RT-PCR অ্যাপের মাধ্যমে তৃণমূল স্তর থেকে করোনার তথ্য জোগাড় করতে নামছে কেন্দ্রীয় সরকার।
দেশের মধ্যে একমাত্র রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার করোনা তথ্য সঠিক ভাবে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ কেন্দ্রের। তাই এই অ্যাপ তাদের এড়িয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্যই বানানো হয়েছে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি রাজ্য সফরের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে করোনার তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। তাদের দাবি, রাজ্য সরকার করোনা আক্রান্ত ও মৃতের যে তথ্য দিচ্ছে তা নির্ভরযোগ্য নয়। হাতে লেখা কাগজে তথ্য দেওয়া হচ্ছে। যাতে কারচুপির সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন এই অ্যাপে সন্দেহভাজন করোনা রোগী ও করোনা রোগীদের তথ্য পূরণ করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই তথ্য পৌঁছে যাবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। এই অ্যাপের মাধ্যমেই তাঁরা জানতে পারবেন নমুনা পরীক্ষার ফল।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশ চন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, ‘যাঁরা নমুনা সংগ্রহ করছেন, এই অ্যাপ তাদের সাহায্য করবে। সঙ্গে সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন। এই অ্যাপ নমুনা পরীক্ষার ফল জানতেও সাহায্য করবে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পৌঁছবে একই তথ্য।’ তিনি জানিয়েছেন, ‘খুব তাড়াতাড়ি সংক্রমিত এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা পরীক্ষা শুরু হবে। সেখানে কাউকে দেখে যদি করোনা পরীক্ষা প্রয়োজন বলে মনে হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাপে সেই তথ্য পূরণ করে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের জানাতে পারব আমরা।’
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল পঞ্চানন কুণ্ডু জানিয়েছেন, ‘বাইরে থেকে শ্রমিক ও পড়ুয়াদের বাড়ি ফেরা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়েছি। এখন প্রতিদিন ২০০টি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এই অ্যাপ এলে আমরা প্রতিদিন ৩০০ নমুনা পরীক্ষা করতে পারব।’
অ্যাপটি কী করে ব্যবহার করতে হবে তা জানাতে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবে কেন্দ্র।