বাংলা দেখেছে আমফান, ইয়াস থেকে ফণি–বুদবুদের মতো ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিপর্যয়। করোনাভাইরাসের ধাক্কায় রাজ্যের আর্থ–সামাজিক ব্যবস্থায় প্রভাব পড়েছিল। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মহামারী— আপদকালীন পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে রাজ্য সরকারের আপদকালীন তহবিল একলাফে ১০ গুণ বৃদ্ধি করা হল। আগে রাজ্য সরকার এই খাতে ২০ কোটি টাকা জমা রাখত। এখন তা বেড়ে হল ২০০ কোটি টাকা।
আপদকালীন তহবিল বিষয়টি কী? নবান্ন সূত্রে খবর, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত অর্থ বরাদ্দ এবং খরচের দরকার হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান–সহ একাধিক ন্যূনতম চাহিদা দ্রুত মেটাতে হয়। সরকারি নিয়মে নির্দিষ্ট ‘হেড অফ অ্যাকাউন্ট’ থেকে টাকা বরাদ্দ করে খরচ করতে দীর্ঘ সময় লাগে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আপদকালীন তহবিলের ঊর্ধ্বসীমা ২০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২০০ কোটি করা হয়েছে। ফলে চটজলদি সাহায্যের হাত বাড়ানো যাবে।
হঠাৎ কেন বাড়ানো হল তহবিল? প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এখন অশনি ঘূর্ণিঝড় আসছে। তার প্রভাবে বাংলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আমলাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আর্থিকভাবে আরও বেশি ‘সাবলম্বী’ হওয়ার কথা বলেন। তারপরই তা বাড়িয়ে ২০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে বিধানসভায় ‘দি কন্টিনজেন্সি ফান্ড অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে। গত ১১ এপ্রিল অর্থদপ্তর আপদকালীন তহবিলের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
ঠিক কী জানা যাচ্ছে? এই তহবিল থেকে বিধি অনুযায়ী যখন তখন যে কোনও অঙ্কের টাকা খরচ করা যায়। খরচের পর উপযুক্ত ভাউচার জমা করতে হয় ট্রেজারিতে। তারপর মূল তহবিলের নির্দিষ্ট ‘হেড’ থেকে সেই টাকা ‘অ্যাডজাস্ট’ করা হয়। রাজ্য সরকার আগে কনও এত টাকা আপদকালীন তহবিলে জমা করেনি। কিন্তু যেভাবে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়েছে তা থেকেই এই ভাবনা। তারপরইই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর।