উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জেরে রাজ্য বনাম রাজভবন শীতল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আগেও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। আর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে শিক্ষা দিতে মাঝরাতে জোড়া চিঠি ছেড়েছিলেন রাজ্যপাল। এবার আবার রাজ্যপালকে আক্রমণ করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এবার আনন্দ বোসকে কবি কটাক্ষে বিঁধেছেন ব্রাত্য বসু। আর তাতেই তোলপাড় হয়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতি।
অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে রাজ্য–রাজ্যপালের সংঘাত চরমে উঠেছে। যার জেরে মামলা পর্যন্ত গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। তখনই সার্চ কমিটি গড়ে তোলার নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। সম্প্রতি সেই সার্চ কমিটি তৈরি হয়েছে বলে জানান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সুপ্রিম কোর্টের গুঁতোয় রাজ্যপাল পদক্ষেপ করেছেন। রাজ্যপালকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শব্দবাণ ছেড়েছেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ যাচ্ছেন। তাঁকে আমি নতুন করে টেনশন দিতে চাই না।’ আজ, শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ সফর সেরে ফিরেছেন। আর তারপরই তোপ দেগেছেন ব্রাত্য বসু।
ঠিক কী বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী? রাজ্যপাল পদটা সাদা হাতি পোষার সমান বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। আর তাতেই সংঘাতের বাতাবরণ নতুন করে তৈরি হয়েছে। আজ শনিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘রাজভবনে কবি বসে আছেন। এই কবি কামার বা কুমোরের নয়, এই কবি রাজার। দুটো দর্শনের লড়াই চলছে। একদল কুক্ষিগত করতে চাইছে। একদল বলতে চায়, আমি চালভাজা, আমিই মুড়ি। একটা সাদা হাতির মতো পদ রাখার কী যৌক্তিকতা আছে?’ এই প্রশ্ন তুলে সরাসরি রাজ্যপালকে বেনজির আক্রমণ করলেন শিক্ষামন্ত্রী। দু’একদিনের মধ্যেই তার জবাব দেবেন রাজ্যপাল বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সাগর দত্ত হাসপাতালে চলছে দালালরাজ, অভিযোগ তুলে সরব হলেন মদন মিত্র
আগেও রাজ্যপালের সঙ্গে দ্বন্দ্বে নানা মন্তব্য করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। রাজ্যপালের উদ্দেশে মহম্মদ বিন তুঘলক, ফাঁসুড়ের মতো শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। পরিবর্তে হুঁশিয়ারির সুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেছিলেন,‘যা করেছি, তাতে গর্বিত আমি। মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কী হবে দেখতে পাবেন।’ তখন পাল্টা টুইট করে ব্রাত্য বসু লেখেন, ‘মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, কী ঘটে দেখুন। সাবধান, সাবধান, সাবধান। শহরে নতুন ভ্যাম্পায়ার উপস্থিত হয়েছেন। সাবধান হয়ে যান শহরবাসী। রাক্ষস প্রহরে’র জন্য উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছি, যার উল্লেখ রয়েছে ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনিতে।’ তারপরই জোড়া চিঠি গিয়েছিলেন নবান্নে এবং কেন্দ্রে।