পশ্চিমবঙ্গে লকডাউনের বিধি ঠিকমতো পালন হচ্ছে না বলে এবার অভিযোগ তুললেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রবিবার টুইটারে এক ভিডিয়ো বার্তায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে এই সঙ্কটের সময় রাজনীতি না করে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দিয়েছেন। সঙ্গে আশা প্রকাশ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আগামী দিনেও লকডাউনের বিধি ১০০ শতাংশ পালন করবেন।
রবিবার বেলা ১.৩৩ মিনিটে রাজ্যপালের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে প্রকাশ করা ওই বার্তায় রাজ্যের লকডাউনের হাল নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন দেখিয়েছে রাজ্যপালকে। হিন্দিতে তিনি বলেন, ‘আমি পশ্চিমবঙ্গবাসীকে করজোড়ে একটা অনুরোধ করতে চাই। লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। তার মানে একটাই। আগামী সময় আরও চ্যালেঞ্জিং হতে চলেছে। সেই পরীক্ষা পাশ করতে আমাদের সবার একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। ১০০ শতাংশ সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং। আমরা লকডাউনের বিধি কোনও রকমেই হালকা করব না।’
এর পরই রাজ্যের ঘটনাক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের চিঠিতে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে, লকডাউন শিথিল করা হচ্ছে। বাজারে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং হচ্ছে না। ধর্মীয় জমায়েত রোখা হচ্ছে না। পুলিশ বরং তাতে সাহায্য করছে।’
বাজারে মানুষের ভিড় বাড়ার পিছনে রাজ্যপাল বলেন, ‘অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন জিনিসকেও লকডাউনের নিষেধাজ্ঞার বাইরে আনা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমার অনুরোধ, এটা রাজনীতি করার সময় নয়। এটা নিজের রাজনৈতিক কর্মীদের ময়দানে নামানোর সময় নয়। রেশন সরকারি পরিকাঠামোর মাধ্যমেই বণ্টন হওয়া উচিত। আপনার দলের নেতারা রেশন দিলে হয়তো আপনার রাজনৈতিক উপকার হবে, কিন্তু অনেক বড় বিপদে পড়ব।’
সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং না মানলে সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘যে সব সরকারি আধিকারিকরা সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মানছেন না, যারা ধর্মীয় জমায়েত বন্ধ করছেন না, তাদের কড়া বার্তা দেওয়া উচিত।’
বক্তব্যের শেষে রাজ্যপাল বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি রাজ্যের জনতা এই কাজে নিজের ১০০ শতাংশ দেবে। মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনতার সেবা করবেন।’
বলে রাখি, রাজ্যে সব জায়গায় লকডাউনের বিধি মানা হচ্ছে না বলে সতর্ক করে শুক্রবার নবান্নকে চিঠি দেয় কেন্দ্র। শনিবার প্রকাশ্যে আসে সেই চিঠি। তাতে দেখা যায়, কলকাতার বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত জায়গায় লকডাউন মানা হচ্ছে না বলে দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এমন চিঠির কথা অস্বীকার করেন মমতা। সঙ্গে দাবি করেন লকডাউন মানা হচ্ছে যথাযথভাবেই।