ভর্তি করার পর করোনা ধরা পড়ায় মরণাপন্ন রোগীকে স্থানান্তরে বাধ্য করেছিল নার্সিংহোম। তাতেই তাদের ২৫,০০০ টাকা জরিমানা করল স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ কমিশন। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনের প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, করোনা ধরা পড়লে ভর্তি হওয়া রোগীকে কোনও ভাবেই স্থানান্তর করতে বলতে পারবে না বেসরকারি হাসপাতাল। চিকিৎসা করতে হবে সেই হাসপাতালেই।
ঘটনা গত জুলাইয়ের। স্বাস্থ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সুভাষচন্দ্র কোঙার নানা জটিলতা নিয়ে কলকাতার বিনায়ক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তির পর তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়। তাতে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এর পর তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য চাপ দিতে থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুভাষবাবুর মেয়ে সম্রাজ্ঞীর অভিযোগ, বাবা স্বাস্থ্য দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। দীর্ঘদিন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তাঁর জন্য বেড খুঁজতে নাভিশ্বাস ওঠে। ডিসান হাসপাতালে যোগাযোগ করলে তারা সরাসরি ৩ লক্ষ টাকা অগ্রিম দাবি করে। শেষে হাওড়ার সঞ্জীবন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় বৃদ্ধকে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এর পর বিনায়ক হাসপাতাল ও ডিসান হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হন সম্রাজ্ঞী।
এদিন সেই মামলার শুনানিতে অসীমবাবু বলেন, অতিমারি পরিস্থিতিতে কোনও কারণেই রোগীকে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া যায় না। কোনও হাসপাতাল নিজেকে ‘নন কোভিড’ ঘোষণা করে মরণাপন্ন রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বলতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরও বিনায়ক হাসপাতালের ভূমিকা গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য বেসরকারি হাসপাতালটিকে ২৫,০০০ টাকা জরিমানা করে কমিশন। সঙ্গে অগ্রিম চাওয়ায় ২৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে ডিসান হাসপাতালকেও।