টানা ৩৭ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি এবং জেরা। এরপর অবশেষে রবিবার গভীর রাতে খাতায় কলমে গ্রেফতার করা হয় বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলকে। জানা গিয়েছে, গতকাল রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ তাঁকে নিয়ে আসা হয় সিজিও কমপ্লেক্সে। আজ ব্যাংকশাল কোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁকে। জানা গিয়েছে, ৫০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ব্যাঙ্ক লেনদেন, স্কুল নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিট, প্রার্থীদের প্রবেশপত্র, প্রার্থীদের নামের তালিকা, রাজ্য জুড়ে কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০টি পুরসংস্থায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে অয়নের বাড়ি এবং অফিস থেকে। ইডির দাবি, শুধু এসএসসি নয়, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে রাজ্যের একাধিক জেলার পুরসভাতেও চাকরি পেয়েছেন অযোগ্য চাকরি প্রার্থীরা। এই কাণ্ডে জড়িত অয়ন। (আরও পড়ুন: হাওড়া থেকে চালু হবে আরও এক বন্দে ভারত, ৭৫০ কিমি দূরত্ব পার হবে মাত্র ৬ ঘণ্টায়)
জানা গিয়েছে, সল্টলেকের এফডি ব্লকের ৩৮৮ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকেন শান্তনু ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন। ১৮ মার্চ দুপুর ৩টে নাগাদ ইডির ৬ প্রতিনিধির একটি দল তাঁর বাড়িতে যায়। ইডির দাবি, শান্তনুর হোটেল, রিসর্ট-সহ অন্যান্য ব্যবসা দেখভাল করতেন অয়ন। এহেন অয়নের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নথি যাচাইয়ের পর ইডি আধিকারিকরা মনে করছেন, রাজ্যে যেভাবে এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড সংগঠিত হয়েছে, ঠিক সেইভাবে রাজ্যের একাধিক পৌরসভাগুলিতেও টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। অয়ন শীলের অফিসের একটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার একাধিক পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।
আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনের মাঝেই এবার সরকারি কর্মীদের নিয়ে কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতার
এদিকে জানা গিয়েছে, অয়নের সল্টলেকের ফ্ল্যাট এবং অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে এসএসসির একাধিক ওএমআর শিট সহ একাধিক নথিপত্র এবং চাকরিপ্রার্থীদের রোল নাম্বার লেখা খাতা। ইডির তদন্তকারীদের দাবি, উদ্ধার হওয়া ওএমআর শিট যে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নাম লেখা রয়েছে সেখানে অনেকেই বর্তমানে চাকরি করছেন। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়েই এই সকল চাকরি প্রার্থীরা নিজেদের চাকরিগুলি আদায় করেছিলেন। তাছাড়া অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এই টাকা কোথা থেকে এসেছে, কে পাঠিয়েছে সেই বিষয়েও জানতে চায় ইডি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নিতির টাকা অয়নের কাছে এসেছি কিনা তায় খতিয়ে দেখা হবে।