কিছুদিন আগে শহরের পার্কিং ফি বাড়িয়ে ব্যাক–গিয়ার দিতে হয়েছিল কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। আর তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। এমনকী ফিরহাদের মেয়র পদ থেকে সরে যাওয়ার জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল। কারণ তিনিই তেমন মন্তব্য করেছিলেন। চেতলা থেকে নতুন কোনও ছেলে আসবে— মন্তব্যটি তাঁর। তবে সেসব এখন অতীত। তাই আবার পার্কিং ফি বৃদ্ধি নিয়ে তৎপরতা শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা বলে সূত্রের খবর।
এদিকে মানুষের উপর কোনও বোঝা চাপানো যাবে না বলে অবস্থান স্পষ্ট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সরকার এটা চায় না। আর তাই পার্কিং ফি বাড়িয়েও ব্যাকফুটে যেতে হয়েছিল মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। এখন পুরনো পার্কিং ফি নিতে হচ্ছে। সুতরাং আয় বাড়ানো যায়নি। তবে এবার কলকাতা পুরসভা সিদ্ধান্তের দায় নিজেদের ঘাড়ে রাখতে চাইছে না। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পার্কিং ফি কতটা বৃদ্ধি করা যেতে পারে সেটা জানতে নবান্নে চিঠি এবং ফাইল পাঠানো হবে। সেক্ষেত্রে দেশের কয়েকটি প্রথমসারির শহরের পার্কিং ফি’র তালিকা ‘রেফারেন্স’ হিসেবে পাঠানো হতে পারে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর।
আর কী জানা যাচ্ছে? গত ১ এপ্রিল থেকে বর্ধিত পার্কিং ফি চালু করেছিল কলকাতা পুরসভা। প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি হয়েছিল পার্কিং করার খরচ। আর সেটা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বর্ধিত পার্কিং ফি বাতিল করতে হয় পুরসভা কর্তৃপক্ষকে। এখন আবার তা নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে। পার্কিং বিভাগের অফিসাররা জানাচ্ছেন, গত ১২ বছর ধরে কলকাতা শহরে কার পার্কিংয়ের ফি বাড়েনি। তবে পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সিগুলির একাংশ অবৈধভাবে জনগণের থেকে যথেচ্ছভাবে ফি আদায় করত। এই পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে পার্কিং ফি বৃদ্ধি জরুরি।
ঠিক কী বলছেন মেয়র? পার্কিং ফি বৃদ্ধি হলে কলকাতা পুরসভার আয় বাড়বে বলে মনে করেন অফিসাররা। এই বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পুনরায় বিবেচনা করা হচ্ছে। অনুমোদনের জন্য নবান্নে চিঠি পাঠানো হবে।’ কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, আড়াই গুণ পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করা যেতে পারে। কিন্তু পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ভুল নয়। কিছুটা হলেও বাড়ানো প্রয়োজন। এই প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো শহরের কার পার্কিং ফি কত, তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেসব রাজ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই কলকাতার জন্য রেট–চার্ট তৈরি হবে। তারপর বিষয়টি প্রস্তাব আকারে নবান্নে যাবে। আর নবান্ন যে রেট চূড়ান্ত করবে সেটা অনুযায়ী পার্কিং ফি ধার্য হবে।