দালালচক্র ঠেকাতে এবার বাড়ির দুয়ারে পৌঁছে যাবে কলকাতা পুরসভা। দালালের খপ্পরে পড়ে পুরসভা কোনও পরিষেবা পেতে প্রচুর টাকা ব্যয় করতে হচ্ছিল নগরবাসীকে। 'টক টু মেয়র' অনুষ্ঠানে এমন অভিযোগও এসেছিল মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে। তাই আম নাগরিককে যাতে পুরসভা কোনও পরিষেবা পেতে দলালদের খপ্পরে না পড়তে হয় সে কারণ দোড়গোড়ায় এবার পরিষেবা নিয়ে হাজির হবেন পুর আধিকারিকেরা।
মেয়রের কথায়, 'ট্যাক্স থেকে অ্যাসেসমেন্ট বিভিন্ন কাজের জন্য মানুষকে পুরসভায় যেতে হয়। কিন্তু বয়স্ক-সহ অনেকেই নানা কারণে পুরসভায় আসতে পারেন না। তাদের জন্য এই ব্যবস্থা। মেয়র জানিয়েছেন, এই সব সমস্যার সমাধানে চালু হয়েছিল 'টক টু মেয়র' অনুষ্ঠান। যে অনুষ্ঠানে ফোনের মাধ্যমে সরাসরি বিভিন্ন সমস্যার কথা জানানো যেত। খোদ মেয়র সেই সমস্যা শুনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের দ্রুত সেই সমস্যা সমাধান করার নির্দেশ দিতেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে বহু ফোন ধরা সম্ভব হয় না মেয়রের। অনেক আবার ফোন করে অভিযোগ জানানোর বিষয়ে সড়গড় নন। পুরসভা সূত্রে খবর, 'টক টু মেয়র'-এর পরিপূরক হিসাবে এই 'দুয়ারে পুরসভা' শুরু করা হবে।
কী কী পরিষেবা পাওয়া যাবে?
পুরসভা সূত্রে খবর, মিডউটেশন, অ্যাসেসমেন্ট-সহ জমিবাড়ি সংক্রান্ত পরিষেবা ছাড়াও জন্ম শংসাপত্রে নাম পরিবর্তনের মতো পরিষেবাও পাওয়া যাবে। এর জন্য কলকাতা পুরসভার তরফে আধিকারিক নিয়োগ করা হয়েছে। তারই প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি যাবেন। নথি খতিয়ে দেখবেন।
অনেক পরিত্যক্ত জমির অ্যাসেসমেন্ট হয়নি। পড়ে থেকে জমিতে জঙ্গল হয়েছে। মশা-মাছির আতুড়ঘর হয়েছে। আধিকারিকরা ওয়ার্ডে ঘুরে খতিয়ে দেখবেন। অ্যাসেসমেন্ট বা মিটেশনের কাজ করে জমি বা বাড়ির মালিকের হাতে শংসাপত্র তুলে দেবেন। এর জন্য সামান্য অর্থ দিতে হবে জমির মালিককে। সেই টাকা থেকেই বেতন দেওয়া হবে এই প্রকল্প কর্মরত আধিকারিকদের।
দালাচক্রে কমেছে পুরসভার আয়
পুরসভার শংসাপত্রে সামান্য নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে দালালচক্রের হাতে পড়েন আমনাগরিক। অনেক সময় দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ টাকা দিতে হয় দালাল চক্রকে। উল্টে দেখা পুরসভার আয়ও কম হয়। সে কারণে এই 'দুয়ারের পুরসভা' চালু করার পরিকল্পনা।
মেয়র জানিয়েছেন, পুরসভার কোনও কাজ করাতে গিয়ে মানুষ যাতে বিভ্রান্ত না হয় সে কারণ বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দেওয়া হবে। বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, স্বাস্থ্যসাথীর মতো কার্ড না থাকলেও তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে করে দেবেন পুরসভার আধিকারিকরা।