পুরো পরিকল্পনা করে ডাকাতির ছক করা হয়েছিল। সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায় এই অপারেশনের ছক। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ফিল্মি কায়দায় পুলিশও পিছু নিয়ে গ্রেফতার করল তিন ডাকাতকে। গভীর রাতের শহরে তখন চলছে টানটান উত্তেজনার মুহূর্ত। পুলিশ সেজে গাড়িতে করে ডাকাতির ছক কষা হয়েছিল। আর এই গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরেই তিনজন ডাকাতকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে খাস কলকাতার বড়তলা এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি উত্তর কলকাতার বড়তলা এলাকায় একটি ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে। অনিরুদ্ধ সিংহ নামে এক যুবক রাতে বাড়িতে ফিরছিলেন। তখন স্টার থিয়েটারের সামনে একটি গাড়ি তাঁর সামনে এসে দাঁড়ায়। এক যুবক ছিল স্টিয়ারিংয়ে। বাকি তিনজন যুবক গাড়ি থেকে নামে। তারা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। অনিরুদ্ধ এত রাতে রাস্তায় কেন? তা জিজ্ঞাসা করা হয়। তারপর তাঁকে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগে নিয়ে যাওয়ার নাম করে গাড়িতে তোলা হয়। গাড়ির ভিতর অনিরুদ্ধকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
কিছুক্ষণ পর নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে অনিরুদ্ধের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ৮ হাজার টাকা লুট করে নেওয়া হয়। টাকা নেওয়ার পর ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে তাঁকে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। ওই যুবক বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের পরই কপালে ভাঁজ পড়ে পুলিশ কর্তাদের। শহরের বুকে এমন ঘটনা কি করে ঘটল তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। অনিরুদ্ধ গাড়ির চারটি নম্বর দিয়ে পুলিশকে সাহায্য করেছিল। সেই নম্বরের সূত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশ। অবশেষে গাড়িটি শনাক্ত করা হয়। রাতে নাকা চেকিং করার সময় যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ এবং অরবিন্দ সরণির সংযোগস্থলে গাড়িটি দেখতে পেয়ে পুলিশ দাঁড় করানোর চেষ্টা করে। তখন পালানোর চেষ্টা করে তারা।
পুলিশও গাড়িটির পিছু নেয়। পথে অন্যান্য গাড়ি তেমন না থাকায় রীতিমতো রেস শুরু হয়ে যায়। নানা অলিগলি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে যায়। তখন গাড়ি থেকে নেমে চারজনই পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশও গাড়ি থেকে নেমে তাদের তাড়া করেন। সুরজ সাউ, মনোজ দাস এবং শাহবান খানকে পুলিশ তাড়া করে ধরে ফেলে। বাকি একজন পালাতে সক্ষম হয়। ধৃতদের দফায় দফায় জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত একমাস ধরে উত্তর কলকাতার একাধিক জায়গায় পুলিশ সেজে এভাবেই লুঠপাট চালিয়েছে তারা।