ঝাড়খণ্ডে কলকাতার ব্যবসায়ী খুনের ঘটনার কিনারা করল লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখা। তাও আবার জামতাড়ার মিহিজাম থানার পুলিশ শহরে আসার আগেই। মধ্য কলকাতার পার্ক স্ট্রিট এলাকার রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের বাসিন্দা সইফ খান (৩৮)। তাঁকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরই দুই বন্ধুকে। ধৃতদের মধ্যে একজনের নাম আফতাব আলম।
ঠিক কিভাবে খুন করা হয়েছিল? পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, বুধবার জামতাড়া–মিহিজাম জাতীয় সড়ক লাগোয়া জঙ্গল থেকে সইফের গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে খুনের ছক কষেছিল তাঁর বন্ধুরাই। প্রথমে তাঁকে ফোন করে ডাকে তারা। সেখানে সইফ এলে বিয়ারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। আর তা পান করে সইফ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তখন তাঁকে এক বন্ধুর গাড়ির ডিকির ভিতরে রাখা হয়। সেখান থেকে ঝাড়খণ্ডের দিকে রওনা দেয় অভিযুক্তরা। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর কাছে সইফের মোবাইল বন্ধ করে ফেলে দেওয়া হয়।
এরপর ঝাড়খণ্ডের জামতারার মিহিজাম এলাকায় গাড়ি থামিয়ে সইফের গলার নলি কেটে তাঁকে খুন করা হয়। এমনকী দেহ জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। ভাবা হয়েছিল, কোনও পশু তা খেয়ে নেবে। আর কেউ টের পাবে না। লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার অফিসাররা তদন্তে নেমে সইফের মোবাইলের তথ্য খতিয়ে দেখেন। সেখানেই ঘটনার দিনের কললিস্ট হাতে চলে আসে তদন্তকারীদের। তারপর নিশ্চিত হতে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেন তাঁরা। হাতে চলে আসে দুই বন্ধুর ছবি। তাদের জেরা করতেই রহস্যের ফাঁস হয়ে যায়।
এই খুনের পিছনে উদ্দেশ্য কী? লালবাজার সূত্রে খবর, প্রোমোটিং ছাড়াও ঋণের ব্যবসা ছিল সইফের। সেখান থেকে বন্ধুদের ১৫ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন সইফ। কিন্তু ৪ লক্ষ টাকা ফেরত পাননি। তা নিয়ে চলে তদ্বির তদারকি। তখনই ঝামেলার সূত্রপাত হয়। টাকা না পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন সইফ। তাই তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়। আর খুন করা হয়। এই ঘটনায় আর কে কে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।