‘আমায় মেরে ফেল। কিন্তু স্ত্রী এবং ছেলেকে জড়িয়ে দিও না’ - আদালতের বাইরে এমনই আর্জি জানালেন মানিক ভট্টাচার্য। যে কথা বলার সময় প্রায় কেঁদে ফেলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। যদিও ইডির চার্জশিটে মানিকের স্ত্রী এবং ছেলের নাম আছে।
প্রাথমিক টেট দুর্নীতি মামলায় আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইনে বুধবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে মানিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। চার্জশিটে মানিকের স্ত্রী, ছেলে, মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল-সহ ছ'জনের নাম আছে। মোট ৫০ জন সাক্ষীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে ইডির চার্জশিটে। সূত্রের খবর, কারা টাকা দিতেন, কারা টাকা নিতেন, কারা ফায়দা লুটত, কত টাকা নেওয়া হত - সেই সংক্রান্ত তথ্যও ১৫৯ পৃষ্ঠার চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইডির চার্জশিট পেশের দিন মানিকের চোখে-মুখে উৎকণ্ঠাও ধরা পড়েছে। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, আদালতের মধ্যেই ভগবানের নামে বিড়বিড় করে জপ করতে থাকেন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূলের বিধায়ক। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে আসার সময় মানিক আর্তনাদ করে বলেন, ‘আমায় মেরে ফেল। কিন্তু স্ত্রী এবং ছেলেকে জড়িয়ে দিও না।’ প্রায় কেঁদেই ফেলছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক টেট দুর্নীতি মামলায় গত ১১ অক্টোবর মানিককে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তারপর থেকে জামিন মেলেনি। ইডি দাবি করেছে, এখনও পর্যন্ত মানিকের ৩০ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। মানিকের স্ত্রী এবং ছেলে ছাড়াও একাধিক আত্মীয়ের কাছ থেকে সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে। শুধু তাই নয়, কলামন্দিরে বেসরকারি বিএড, ডিএলএড কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকে কলেজগুলিকে ৫০,০০০ টাকার চেক মানিকের ছেলের কোম্পানিতে দিতে বলা হয়েছিল বলে দাবি করেছিল ইডি।
আরও পড়ুন: Manik Bhattacharya: বিএড, ডিএলএড কলেজগুলিকে NOC দেওয়ার জন্য কোটি-কোটি টাকা তোলা হয়েছিল, দাবি ইডির
সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফে দাবি করা হয়েছিল, ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা মানিকের ছেলে কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল। মানিকের নির্দেশ মেনেই এই টাকা দেওয়া হয়েছিল। সেভাবেই মানিক 'তোলাবাজি' করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থার অভিযোগ, ২০১৪ সালে ৩২৫ জনকে টেটে উত্তীর্ণ করিয়ে দেওয়ার জন্য মানিক মোট ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা নিয়েছিলেন।