মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ আদৌও কি বৈধ? তা নিয়ে এখন শুনানি চলছে বিধানসভায়। সপ্তাহখানেক আগেই মুকুল রায়ের বিধায়ক পদের বৈধতা নিয়ে রাজ্য বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। তারপর থেকেই শুনানি চলছে বিধানসভার স্পিকারের ঘরে। শুক্রবার এই সক্রান্ত শুনানিতে বিস্ফোরক দাবি করলেন মুকুল রায়ের আইনজীবী। বিধানসভার স্পিকারকে তিনি জানিয়েছেন, 'মুকুল রায় দল ছাড়েননি। খাতায়-কলমে এখনও তিনি বিজেপিতেই রয়েছেন। '
অবশ্য মুকুল রায়ের আইনজীবীর এই দাবিকে একেবারেই মানতে নারাজ বিজেপির আইনজীবী। বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন মুকুল রায়। সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন ফুটেজও রয়েছে তাদের কাছে। তার পরেও কিভাবে তার আইনজীবী বলতে পারেন যে তিনি বিজেপি ছাড়েনি? কার্যত এই প্রশ্ন তুলে মুকুল রায়ের আইনজীবীর এই দাবির প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজেপির আইনজীবী। বিজেপির আইনজীবীর বক্তব্য,'এ বিষয়ে তিনি আইনগতভাবে প্রতিবাদ জানাবেন। '
এর আগে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বিধানসভার স্পিকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল। তারপরেই রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ' আদালতের রায় মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
মুকুল রায়ের বিধায়ক পদের বৈধতা নিয়ে তারও আগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাটি উঠেছিল। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টও রাজ্য বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ,হাইকোর্টের এক্তিয়ারকে চ্যালেঞ্জ করে ঠিক সেই সময়ই সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে জয়ী হয়ে আসা বিধায়ক মুকুল রায়। বিজেপির টিকিটেই মুকুল রায় কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা আসন থেকে জয়ী হন। পরে আবার তিনি তৃণমূলে ফিরে আসেন। তারপরেই শুরু হয় বিতর্ক। তার বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় বিজেপি।
এদিকে, তৃণমূলে ফিরে আসার পর তাকে পিএসির চেয়ারম্যান করা হয়। তাতে বিতর্ক আরও বেড়ে যায়। বিরোধীদের দাবি করে, নিয়ম অনুযায়ী বিরোধী দল থেকেই পিএসির চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। কিন্তু, মুকুল রায় শাসক দলে থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে চেয়ারম্যান করা হলো? সেই অভিযোগে সরব হয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। এর পরেই তাকে চেয়ারম্যান নিয়োগ অবৈধ দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়।
যদিও সেই সময় মামলার শুনানিতে রাজ্যের প্রাক্তন এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তও জানিয়েছিলেন, পিএসি চেয়ারম্যান করার সময় খাতা-কলমে বিজেপি বিধায়ক ছিলেন মুকুল রায়।
বিধানসভার অধ্যক্ষের ঘরে আগামী ৩ জানুয়ারি মুকুল রায়ের মামলার পরবর্তী শুনানি। অন্যদিকে, সুপ্রিমকোর্টের মামলাটি আগামী ২২ জানুয়ারি ওঠার কথা আছে।