দরপত্র আহ্বান করা হলেও চড়া রাজস্বের দাবিতে সাড়া দেয়নি কোনও সংস্থা। তার জেরে আপাতত অনিশ্চয়তার মুখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত লটারি ব্যবসা।
করোনা সংক্রমণের জেরে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পরে গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাজ্য লটারি। রাজ্য সরকারের ভাঁড়ারে অবশ্য আগের মতোই ভিনরাজ্যের লটারি থেকে জিএসটি বাবদ প্রাপ্ত শুল্ক জমা পড়ছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত বিভিন্ন লটারি সিরিজ চালু করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে নবান্ন।
জানা গিয়েছে, লটারি চালু করতে দরপত্র আহ্বান করে রাজ্য সরকার। তাতে শর্ত হিসেবে বলা হয়, রাজ্য সরকারকে ন্যূনতম ২৫০ কোটি টাকা রাজস্ব দিতে হবে। মনে করা হচ্ছে, তাতেই বেঁকে বসেছেন লটারি ব্যবসায়ীরা।
হিসেব বলছে, ২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বছরে ৪৮টি সাপ্তাহিক এবং ৬টি বাম্পার লটারি খেলার আয়োজন করত রাজ্য সরকার। ১২টি ‘বঙ্গলক্ষ্মী সুপার’, ১২টি ‘বঙ্গভূমি সুপার’ ও ২৪টি সাপ্তাহিক ‘বঙ্গলক্ষ্মী’ লটারির আয়োজন করা হত। এ ছাড়া বিশেষ উৎসব উপলক্ষে এক কোটি টাকা পুরস্কারের ‘বাম্পার’ লটারির আয়োজন হত দীপাবলী ও রথযাত্রার মতো উৎসবে। সাপ্তাহিক লটারির টিকিটের দাম নির্দিষ্ট হয়েছিল দুই টাকা ৫ টাকা। বাম্পার লটারির টিকিটের দাম ছিল দশ টাকা।
২০১৮ সালের মে মাস থেকে দৈনিক লটারির আয়োজন করে রাজ্য সরকার। সোমবার থেকে রবিবার ৭ দিনে সাতটি খেলা চালু ছিল। পাশাপাশি ছিল ৬টি বাম্পার লটারির ব্যবস্থা।
চাহিদা বাড়ার ফলে ক্রমে প্রতিদিন ৩ কোটি টিকিট ছাপা হয়েছে। এমনকি দৈনিক টিকিটের দাম বাড়িয়ে ৬ টাকা করা হয়। ২০ টাকা দাম দাঁড়ায় বাম্পার সিরিজের টিকিটের। কিন্তু বর্তমানে এ সবই শিকেয় উঠেছে।
লটারি ডিরেক্টোরেট-এর হিসেব বলছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবর্ষে প্রায় ১,০০০ কোটি টিকিট বিক্রির জেরে ২২৩ কোটি টাকা আয় হয় রাজ্য লটারির। ২০১৯-২০২০ অর্থবর্ষে ৩০০ কোটি টাকা রোজগারের পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য প্রশাসন, তবে অতিমারীর জেরে লকডাউনে আচমকা লটারি বন্ধ হওয়ায় তা ভেস্তে গিয়েছে।
এ দিকে রাজ্য সরকারের লটারি বন্ধ থাকলেও চুটিয়ে বাংলার বুকে ব্যবসা করে চলেছে ভিনরাজ্যের লটারি সংস্থাগুলি। চোখের সামনে দিয়ে লটারি বাবদ মোটা আয়ের নাগাল হারিয়ে গেলেও আপাতত নিরুপায় রাজ্য লটারি নিয়ন্ত্রক দফতার।