কোভিডের কারণে দীর্ঘ সময় পড়ুয়াদের পঠন পাঠন ব্যাহত হয়েছে। তার উপর এবার দেড় মাসের গরমের ছুটি থাকায় স্কুলের পড়ুয়ারা আদৌও কী পিছিয়ে রয়েছে বা তাদের লেখাপড়ার কী অবস্থা তা নিয়ে খোঁজখবর নিতে তৎপর হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই কারণে সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকারপোষিত স্কুলগুলিতে চালু হয়েছে ‘পঠন উৎসব।’ সাধারণত পড়ুয়ারা স্কুলের শেখানো কোনও বিষয় ভুলে গিয়েছে কিনা, তাদের পড়তে অসুবিধা হচ্ছে কিনা, কোনও শব্দ দিয়ে বাক্য গঠন করতে বলা হলে তা পারছে কিনা, তা জানতেই এই পঠন উৎসব শুরু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নেশা করে স্কুলে এসে মেরে ২ ছাত্রের কান ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
গত দেড় মাস গ্রীষ্মকালীন ছুটি থাকার ফলে অনেক পড়ুয়াই যে পড়াশোনায় পিছিয়ে গিয়েছে সে কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন প্রাথমিকের শিক্ষকদের একাংশ। সেই কারণে কোনও কোনও স্কুলে ল্যাপটপ খুলে দিয়ে সংবাদপত্র পাঠের আয়োজন করা হচ্ছে। আবার অচেনা গল্প বা কবিতা পাঠ করানো হচ্ছে। তাতে পড়ুয়াদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। শিক্ষকদের একটা বড় অংশের মতে, কোভিডের সময়ে পড়াশোনায় ব্যাপক ঘাটতি হয়েছিল। সেই সমস্যা কাটিয়ে এক বছর ধরে চলছে স্কুল। তার মধ্যে আবার দেড় মাসের গ্রীষ্মকালীন ছুটি ছিল স্কুলগুলিতে। এমন অবস্থায় পড়ুয়াদের মধ্যে পড়াশোনার ফাঁক তৈরি হয়েছে। একাধিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাথমিকের পড়ুয়ারা। অনেক দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া প্রথম শ্রেণির বাংলা বই ঠিকমতো পাঠ করতে পারছে না আবার চতুর্থ শ্রেণির অনেক পড়ুয়া দ্বিতীয় শ্রেণির বই পাঠ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে। পড়ুয়ারা ঠিক কতটা পিছিয়ে গিয়েছে বা কোথায় ফাঁক তৈরি হয়েছে? তা জানার জন্য পঠন উৎসব চালু করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে বেহালার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিক জানান, পড়ুয়াদের একটি বর্ণ কার্ড দেওয়া হচ্ছে। প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াদের সরল বাক্য গঠন করতে দেওয়া হচ্ছে এবং পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের যৌগিক বাক্য গঠন করতে দেওয়া হচ্ছে। তা অনেকেই পেরেছে আবার অনেকেই পারেনি। আগামী দু মাসের মধ্যে পড়ুয়াদের এই খামতি পূরণ করার পরিকল্পনা করছে স্কুলটি। স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এই পঠন উৎসব চালু করা হয়েছে। তাতে পড়ুয়ারা উৎসাহ পাচ্ছে পড়ুয়ারা। অন্য একটি স্কুলের শিক্ষকদের বক্তব্য, কিছু পড়ুয়া ভালো ফল করলেও অনেক পড়ুয়া পিছিয়ে রয়েছে। সেই খামতি পূরণ করা এখন উদ্দেশ্য। এবিষয়ে শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, পঠন উৎসবের মাধ্যমে পড়ুয়াদের খামতি বের করে শিক্ষকদের উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।