একেবারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখের সামনে পড়ে গেলেন কুন্তল ঘোষ। দুজনের মধ্যে প্রচুর মিল। দুজনেই নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি। দুজনেই তৃণমূলের দাপুটে নেতা ছিলেন। আর বৃহস্পতিবার দুজনে সামনা সামনি হতেই তুমুল বাকবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায় বলে সূত্রের খবর। মূলত কেন কুন্তল বার বার পার্থর নাম নিয়েছে তা নিয়েই আপত্তি তোলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তিনি নাকি দাবি করেছেন কুন্তলকে তিনি চেনেনই না। আর সূত্রের খবর, কুন্তলের দাবি, পার্থ ঘনিষ্ঠের মাধ্যমে কুন্তল যে টাকা পাঠাতেন তা যেত পার্থর কাছেই । আর সেই পার্থই এখন পুরো ঘুরে গিয়েছেন।
এদিকে দুজনের মধ্য়েই এই বিবাদকে কেন্দ্র করে জেলের অন্দরেও শোরগোল পড়ে যায়। সহবন্দিদের মধ্যে এনিয়ে হাসি ঠাট্টাও শুরু হয়ে যায় পুরোদমে। তবে শেষ পর্যন্ত জেলরক্ষীদের হস্তক্ষেপে দুপক্ষের মধ্যে ঝামেলা কিছুটা হলেও মেটে। তবে পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে আগামী দিনে ফের উভয়ের মধ্যে ঝামেলা চরমে উঠতে পারে।
পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্য়াট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই টাকা কীভাবে এসেছিল সেই রহস্যের সমাধান হয়নি এখনও। প্রশ্ন উঠেছে তবে কি কুন্তল, শান্তনু সহ জেলা স্তরের তৃণমূলের এজেন্টদের মাধ্যমে চাকরি চুরির টাকা জমা করা হত অর্পিতার ফ্ল্যাটে?
তবে সূত্রের খবর, জেলের মধ্য়ে কুন্তল ও পার্থ একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু করেন। তবে শেষ পর্যন্ত জেল আধিকারিকরা দুজনকে সরিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু এদিনের ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে অর্পিতার ঘরে এত টাকা এল কীভাবে? কুন্তল ও তার সহযোগীরা সেই টাকা না পাঠালে এত টাকা পাঠাল কে?
এদিকে ইতিমধ্যেই কুন্তল অভিযোগ তুলেছেন জেলের মধ্যে তাকে জোর করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সেকারণে তিনি বিচারপতির কাছেও এনিয়ে চিঠি লিখেছেন। তবে গোটা নিয়োগ কেলেঙ্কারির ঘটনাকে ঘিরে বঙ্গবাসীও কার্যত বিভ্রান্ত। কে সত্যি বলছেন কে মিথ্যে বলছেন, কে কাকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন, পরিবারের সুরক্ষার কথা ভেবে কে কার নাম বলতে চাইছেন না এনিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে সব মিলিয়ে এবার জেলের মধ্যেও শুরু হল এক প্রস্থ নাটক।
কুন্তলের মুখোমুখি হতেই মেজাজ হারাচ্ছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তবে আগামী দিনে আরও কী কী দেখতে হবে বঙ্গবাসীকে সেটাই দেখার।