রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর লেখা ‘কবিতা বিতান’ বইয়ের জন্য বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ২০১৯ সালে পাওয়া অন্নদাশঙ্কর স্মারক সম্মান ফিরিয়ে দিলেন গবেষক তথা লেখিকা রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে সাহিত্য আকাদেমির বাংলা উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ইস্তফা দেন লেখক অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস।
রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া বিশেষ সম্মানের প্রতিবাদ জানিয়ে লেখিকা রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘উনি একজন মান্যগণ্য মানুষ। উনি আমাদের সবার ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ওর কাছ থেকে পরিপক্ক সিদ্ধান্ত আশা করি। বইয়ের তো একটা মান থাকতে হবে। পুরস্কার দিলেই উনি নেবেন কেন?’ একইসঙ্গে তিনি জানান, ‘আমার এই সিদ্ধান্ত কোনও রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। এই পুরস্কারের গরিমা রক্ষিত হয়নি।’ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে অন্নদাশঙ্কর স্মারক সম্মান পেয়েছিলেন রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়। মুসলিমদের বিয়ে গান সহ নানা বিষয়ে তাঁর গবেষণা রয়েছে।
একইসঙ্গে ইস্তফা দিয়েছেন সাহিত্য আকাদেমির বাংলা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য লেখক অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথকে বুকের মাঝে রেখেছি। আমার কাছে তাঁর কবিতা দুর্মূল্য। সেই কবির জন্মদিনে কবিতার নাম করে যদি এমন পুরস্কার দেওয়া হয়, তাহলে সামগ্রিকভাবে কবিতাকেই অসম্মান করা হয়।’ একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, ‘আমি বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছি, বাংলা সাহিত্য যেন রাজনীতির কবলে পড়ে গিয়েছে। আমার এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে কোনও রাজনীতির যোগ নেই।’ শুধু ওই পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবাদ করাই নয়, নাম না করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুরও সমালোচনা করেছিলেন অনাদি। তিনি জানান, ‘এই বছর একটি নাটকের বই সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছে। নাটকের বই তো সাহিত্য আকাডেমি পুরস্কার দেওয়ার জন্য নয়। এর জন্য তো সঙ্গীত নাটক আকাদেমি রয়েছে।’ উল্লেখ্য, যে নাটকের বইয়ের কথা বলা হয়েছে, তার লেখক ব্রাত্য বসু। বইয়ের নাম ‘মীরজাফর ও অন্যান্য নাটক’। অনাদি আনান, যিনি ওই নাটকের লেখক, তিনি গতকাল বাংলা আকাদেমির সভাপতি হিসাবে কবিতার অসম্মান করেছেন।