রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা সংহতি মিছিলে কোনও হিন্দু যাবে না। যাবে কিছু হারামখোর আর তৃণমূলের উচ্ছিষ্টভোগী। এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার সকলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন তিনি। দিলীপবাবু দাবি করেন, সেই সব রাষ্ট্রবিরোধীদের নিয়ে রামের বিরুদ্ধে মিছিল করতে চলেছে তৃণমূল।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ‘সংহতি মিছিল করার আগে তৃণমূলের ভিতরে সংহতি আনা উচিত। সংহতির নামে হিন্দু বিরোধীদের এককাট্টা করা হচ্ছে। আমার তো মনে হয় না কোনও হিন্দু এই সংহতি মিছিলে যাবে। যার শরীরে হিন্দুর রক্ত আছে সে রামের বিরুদ্ধে যাবে না। কিছু হারামখোর যাবে, যারা তৃণমূলের উচ্ছিষ্টভোজী। তারা এই করে খাচ্ছে আর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সমস্ত অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। সেই ধরণের লোক যাবে। আর যারা সংসদে CAA পাশ হওয়ার পরে সারা পশ্চিমবঙ্গে আগুন জ্বালিয়েছিল, ট্রেন জ্বালিয়েছিল, বাস জ্বালিয়েছিল, রেল লাইন উপড়ে ফেলেছিল, সেই সব রাষ্ট্রবিরোধীদের নিয়ে এখানে মিছিল হবে রামের বিরুদ্ধে’।
গত মঙ্গলবার নবান্ন থেকে অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের পালটা কর্মসূচি ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনারা আমাকে বারবার জিজ্ঞাসা করছেন বিভিন্ন মন্দির নিয়ে। আমি বার বার বলেছি ধর্ম যার যার আপনার, উৎসব কিন্তু সবার। ২২ জানুয়ারি আমি নিজে দলীয় ভাবে একটা ব়্যালি করব। আমি প্রথমে নিজে কালী মন্দিরে যাব। ওটা সবাই যাবে না। আমি মা কালীকে পুজো দিয়ে হাজরা থেকে সর্বধর্মের মানুষকে নিয়ে মিছিল করে পার্ক সার্কাস ময়দানে গিয়ে আমরা একটা মিটিং করব। মা কালীকে ছুঁয়ে, মন্দির – মসজিদ – গুরুদ্বার, ওখানে অনেক গীর্জাও আছে সব কিছুকে ছুঁয়ে সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে আমরা একটা ব়্যালি করব। আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিছিলটা করব। শুভানুধ্যায়ীরা আসতে পারেন সংহতি মিছিলে। এছাড়া প্রতিটা জেলায় ব্লকে ব্লকে ২২ জানুয়ারি বেলা ৩টায় সম্প্রীতি মিছিল হবে সবাইকে নিয়ে’।
মমতার কর্মসূচির বিরোধিতা করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘এটা খুবই উদ্বেগের। সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট ওনার কাছ থেকে সরে যাচ্ছে বলে উনি কার্যত রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। কার্যত উনি উসকানি দিচ্ছেন, গোটা রাজ্যে ব্লকে ব্লকে সম্প্রীতি মিছিলের নামে যাতে সেইদিন রাম নবমীর মতো গোটা রাজ্যে কোথাও কোথাও অশান্তি ও মানুষের জীবন থেকে শুরু করে ধনসম্পত্তির ক্ষতি হোক। পশ্চিম বাংলার মানুষের কাছে এটা খুবই উদ্বেগের রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী এবং শাসকদলের মুখিয়া, তিনি এই ধরণের আগুন লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই উসকানি ছাড়া উনি ওনার হারিয়ে যাওয়া মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক কিছুতেই ফিরিয়ে আনতে পারবেন না এটা উনি ভালো করে জানেন'।
মমতার সংহতি মিছিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ISF বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকিও। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২২ জানুয়ারি মিছিলের ডাক দিয়ে উসকানি দিতে চাইছেন। আর সেটা নিয়ে শুভেন্দুবাবুরা রাজনীতি করছেন। আমি রাজ্যের সংখ্যালঘু ও ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে বলতে চাই, এদের প্ররোচনায় পা দেবেন না।’
তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২২ জানুয়ারির বদলে ২৩ জানুয়ারি হাঁটুন, আমিও ওনার সঙ্গে হাঁটব। ওই দিন ISF দেশপ্রেম দিবস পালন করে। ওই দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার সংহতি মিছিলে হাঁটতে কোনও সমস্যা নেই।’