আজ তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু হল না। কারণ জীবন সংগ্রামে হেরে গিয়েছেন তিনি। তবে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য ধরা পড়েছিল ছত্রে ছত্রে। যে দায়িত্বই তাঁকে দেওয়া হয়েছিল, সেটাই করেছিলেন সফলভাবে। হ্যাঁ, তিনি রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি প্রয়াত হয়েছেন। তবে শেষবার তিনি কিছু খাবার খেতে চেয়েছিলেন। যা শুনলে অনেকেই চমকে যাবেন। খুবই সামান্য। সেই খাবার ছিল—চপ–মুড়ি, চাউমিন। অসুস্থ অবস্থায় এই খাবারই খেতে চেয়েছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তবে তা দেওয়া হয়নি তাঁকে। হৃদপিণ্ডে অস্ত্রোপচারের পর এই খাবার দেওয়া যায় না।
কী করে এই খাবারের কথা প্রকাশ্যে এলো? বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন তাঁর আইনজীবী। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায় জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে চপ–মুড়ি, চাউমিন খেতে চেয়েছিলেন। নিজে মুখে এই খাবার খেতে চেয়েছিলেন। তবে বাস্তবে তা খাওয়া হয়নি। ইচ্ছেটা অপূর্ণই থেকে যায়। কারণ তাঁর দাঁতে দাঁত লেগে যায়। বাথরুমে যান। আর সেখানেই শেষ। হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর।
এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, স্টেন্ট থ্রম্বোসিসে আক্রান্ত হন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হৃদযন্ত্রে স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। আর সেই স্টেন্টের জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে যায়। তখন স্টেন্ট বের করে নেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ ছিল না। আর তারপরই সব চেষ্টা বিফল হয়ে যায়। ১ নভেম্বর দু’টি স্টেন্ট বসানো হয়েছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শরীরে।
এই খবরে শোকাহত স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তিনি বলেন, ‘সুব্রতদার শেষ যাত্রায় আমার থাকা সম্ভব নয়। সুব্রতদার দেহ আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। আমি অনেক দুর্যোগের সাক্ষী। কিন্তু সুব্রতদার মৃত্যু আমার কাছে অনেকে বড় দুর্যোগ। কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি কিছু বলার মত পরিস্থিতিতে নেই।’