মোমো হোক বা চাউমিন বা বিরিয়ানি - ভোজনরসিক বাঙালির পেটে পড়েনি কোনও ফাস্টফুড। বাড়িতে একটু-আধটু তৈরি করে খেলেও বাইরের খাবারের সঙ্গে সেই তৃপ্তি-রসনা যেন কিছুতেই মিলছিল না। তাই প্রায় ৮০ দিন পর রেস্তোরাঁ খোলায় অবশেষে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে বাঙালি।
আজ, সোমবার থেকে কলকাতার একাধিক বড় রেস্তোরাঁগুলি খুলে গিয়েছে। লকডাউন পরবর্তী ‘নিউ নর্ম্যাল’ মেনেই চলছে রেস্তোরাঁগুলি। কলকাতার খাদ্যরসিকদের মক্কা পার্ক স্ট্রিটে সেই চেনা ছবিটা এতদিন অমিল ছিল। লকডাউনে নিস্তব্ধ বাড়িতে পরিণত হওয়া সেই রেস্তোরাঁগুলি সোমবার থেকে ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে পাওয়ার আশা করছে।
তেমনই এক রেস্তোরাঁ পিটার ক্যাটের ম্যানেজার রোমিও হ্যানসেন বারজিয়ন জানান, রান্নার জায়গা এবং পুরো চত্বর পরিষ্কার করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যাবতীয় নির্দেশিকা মেনে চলা হচ্ছে। যেহেতু ৫০ শতাংশের বেশি আসনে বসানো যাবে না, তাই অর্ধেক কর্মীদের নিয়ে কাজ চলবে। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও মেনু কমাচ্ছি না। তবে অনেকটাই জিনিসপত্রের জোগানের উপর নির্ভর করে। তাই আমরা একটি বা দুটি ডিশ নাও দিতে পারি। তবে সমস্যাটা হল যে অধিকাংশ লোকই মদ চাইবে। কিন্তু সরকার তো পানশালা চালু রাখার অনুমতি দেয়নি। ’
সুরক্ষাবিধি মেনেই শুধুমাত্র মাল্টি-কুইজিন রেস্তোরাঁ খুলেছে জওহরলাল নেহরু রোডের পিয়ারলেস ইন। ম্যানেজার অসীম চক্রবর্তী জানান, কেউ চাইলে একবার ব্যবহারের মতো খাবার জায়গা দেওয়া হবে।
তবে সরকার ছাড় দিলেও কমপক্ষে আগামী এক সপ্তাহ বন্ধ থাকছে ভজহরি মান্না। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনওরকম ঝুঁকি নেওয়ার পক্ষপাতী নয় তারা। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ বসু বলেন, ‘আমরা স্টেশনারি জিনিস বিক্রির কথা বলছি না। আমরা খাবার পরিবেশন করব এবং মানুষ এখানেই খাবেন। আমি কখনও জানতে পারব না কোন ক্রেতা করোনাভাইরাস নিয়ে আসছেন এবং করোনাভাইরাস নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা দেখব কীভাবে পুরো বিষয়টি চলে এবং তারপর সিদ্ধান্ত নেব। যা লোকসান হয়েছে, তাতে আমাদের ব্যবসা ৫০ শতাংশ ছোটোও করতে হতে পারে।’
কিছুটা আশঙ্কিত ক্রেতারাও। ব্যবসায়ী অভিষেক দত্ত বলেন, ‘ওই দু'মাসে আমি রেস্তোরাঁ থেকে কয়েকবার খাবার অর্ডার দিয়েছি। কিন্তু সেখানে যেতে সাহস জোগাড়ে আরও সময় লাগবে আমার।’