‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কোন তারিখে পালন করা হবে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতেই ডাকা হয়েছিল সর্বদলীয় বৈঠক। সেখানে বিরোধী কোনও দলই আসেনি। আসলে বিজেপি রাজ্যপালের করা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যেতে চায়নি। কিন্তু বাকি বিশিষ্টজনেরা নানা মত তুলে ধরেছেন। তাতে পয়লা বৈশাখের পক্ষেই মত বেশি। তবে ২০ জুনকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে কেউ মানতে রাজি নন। এবার রাজ্যের সঙ্গীত কোনটি হবে? তা নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানেও তিনটি বিরোধী দল আসেনি। তবে একটি গান আপাতত ঠিক হলেও আরও মতামত চান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বাংলার আমজনতার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনও গানকে ‘রাজ্য সঙ্গীত’ করতে পারে রাজ্য সরকার বলে সূত্রের খবর।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবসের তারিখ নিয়ে আরও আলোচনা হবে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর এই বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা হওয়ার কথা বিধানসভায়। তারপরই বিল পেশের সম্ভাবনা। পশ্চিমবঙ্গের ‘রাজ্য সঙ্গীত’ নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলে যায় শেষ মুহূর্তে। মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ঘোষণা করেই ফেলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটিকে রাজ্যসঙ্গীত করা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐকমত্য হতে পারেননি উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা। মুখ্যমন্ত্রী চান, বাংলার মাটি গানটির কয়েকটি শব্দ বদলাতে। ‘বাঙালি’ শব্দটির বদলে ‘বাংলা’ শব্দের প্রয়োগ করতে। কিন্তু সেই প্রস্তাব নিয়ে শেষ পর্যন্ত সহমত হতে পারেননি সকলে। তাই এই সিদ্ধান্ত পিছিয়ে যায়।
অন্যদিকে এই গানের মধ্য়ে রয়েছে, ‘বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা– সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক হে ভগবান। বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন– এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান’ লাইন। এখানেই মমতা বাঙালি বদলে বাংলা করা যায় কি না ভাবতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি—স্বাধীনতার আগে বাঙালি মানে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই, সামগ্রিক জাতির, গোটা দেশের বিষয় ছিল। এখন সেটা একটা শুধু বাংলা বোঝায়। তাই বাংলা করে দেওয়ার পক্ষে মত দেন। যদিও তাঁর যুক্তিতে আপত্তি তোলেন এসএউসিআই ’র প্রতিনিধি অমিতাভ চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: এবার মিড–ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে উঠল ইলিশ মাছ, আনন্দের সঙ্গে চলল খানাপিনা
তবে বাকিরা তখন চুপচাপই ছিলেন। কারণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের লাইন বদলে দেওয়া উচিত হবে না বলেই মত দেন অনেকে। তখন ওই আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যেহেতু আমরা একমত হতে পারছি না। তাই আপনাদের যে মতামত আছে সেটা নিয়ে ৫ তারিখের মধ্যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠান। আর ৭ তারিখে পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে আলাপ–আলোচনা করার দিনে তা নিয়ে আলোচনা করব।’ বাংলার মাটি, বাংলার জল’ বা ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’ এই দুই গানের মধ্যে যে কোনও একটার পক্ষে মতামত জানাতে হবে বলেই সূত্রের খবর। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত ঠিক কোনদিকে মতামত ভারী হয়।