বৃহস্পতিবার ভবানীপুর সহ ৩ কেন্দ্রে উপনির্বাচন। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র সহ সংলগ্ন এলাকাকে। ভবানীপুর কেন্দ্রে আরও ২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। মোট ৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে হাই ভোল্টেজ কেন্দ্র ভবানীপুরে। এদিকে জঙ্গিপুর কেন্দ্রের জন্য মোতায়েন করা হচ্ছে ১৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। সামসেরগঞ্জের জন্য মোতায়েন ১৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে কোনও কেন্দ্রেই যাতে নিরাপত্তায় কোনও ঘাটতি না থাকে সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে কমিশন। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ভবানীপুরের নির্বাচনে একেবারে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভবানীপুরের জন্য ৯টি হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড থাকছে। ভবানীপুরের সব বুথেই ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে। প্রতিটি বুথে থাকছে ১৪৪ ধারা।
এদিকে ভোটের আগের রাতে ভবানীপুর কেন্দ্রে চলে ব্যাপক নাকা তল্লাশি। সন্দেহভাজন কেউ এলাকায় ঘুরছে কি না সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে পুলিশ। হরিশ মুখার্জি রোডেও চলে নাকা তল্লাশি। কালীঘাট থানার পুলিশ আধিকারিকদের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরাও এলাকায় রয়েছেন। যে গাড়িগুলিকে সন্দেহজনক বলে মনে হচ্ছে সেখানেও তল্লাশি চালানো হয়। গাড়ির ভেতর বেআইনী কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কি না, বহিরাগত কেউ এলাকায় জড়ো হচ্ছে কি না সেটাও নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ ও কমিশনের প্রতিনিধিরা। বেআইনী টাকা, সোনা, মদ বা অস্ত্র গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিনা দেখা হচ্ছে। রাতভর এই তল্লাশি চলবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মূলত প্রলোভন দেখিয়ে যাতে কোনওভাবে ভোটকে প্রভাবিত করা না হয়ে সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে কমিশন।
এদিকে ভোট কর্মীরাও পৌঁছে গিয়েছেন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও প্রহরায় রয়েছেন। ওয়েব কাস্টিংয়ের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। কমিশন সরাসরি নজর রাখবে ভবানীপুরের বুথগুলির উপর। মূলত কোথাও যাতে ভোট লুঠ, বুথ জ্যামের অভিযোগ থাকলে তা সঠিকভাবে পর্যালোচনা করা যায় তারই ব্যবস্থা করেছে কমিশন। তবে এবার উপনির্বাচনের মধ্যে বৃষ্টিকে ঘিরে কিছুটা উদ্বেগ থেকেই গিয়েছে। বুধবার বৃষ্টির মধ্যে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে আসতে সমস্যায় পড়েন ভোটকর্মীরা। প্লাস্টিকে জড়িয়ে আনা হয় ভোটের সরঞ্জামগুলিকে। কোভিড প্রটোকল মেনেই ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে এই তিন কেন্দ্রের মধ্যে সব থেকে হাই ভোল্টেজ কেন্দ্র অবশ্য়ই ভবানীপুর কেন্দ্র। এই কেন্দ্রের প্রার্থী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বিপরীতে রয়েছেন বিজেপির আইনজীবী প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে ২১শের মহারণে একেবারে হাই ভোল্টেজ কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। বলা যায় গোটা দেশের নজর ছিল নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের দিকে। তবে বাংলার মসনদ দখল করতে পারলেও নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে জয়ের মুখ দেখতে পায়নি তৃণমূল। একেবারে মর্যাদার লড়াইতে একদা সহযোদ্ধা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। এবার সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ই ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রার্থী। গত কয়েকদিন ধরে নেত্রীর হয়ে প্রচারে একেবারে আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছিলেন তাবড় তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে প্রচারে ঝড় তোলার চেষ্টা করেছিল বিজেপিও। খোদ বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, এই আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী জিতলে তিনি চেয়ার ছেড়ে দেবেন। তবে এই আসনে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি কে হাসে সেদিকেই তাকিয়ে গোটা বাংলা।