স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্ত ২৯০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে ২৫৩৯ জনেরই (৮৭.৩%) মৃত্যুর মূল কারণ কোমর্বিডিটি। বরাবরই দেখা গিয়েছে, করোনায় মৃতদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কোমর্বিডিটির জেরেই মারা গিয়েছেন। তাই এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রশাসন এই জাতীয় অসুস্থ ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে একটি সমীক্ষা শুরু করেছে। ভবিষ্যতে মৃত্যুর হার কমাতেই এই উদ্যোগ।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকর্মীরা সমীক্ষার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কোমর্বিডিটির সমস্যা হিসেবে হাইপার টেনশন, ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, টিবি, ক্যান্সারের মতো রোগগুলিকে বাছাই করা হয়েছে। এই সমীক্ষার ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, ‘এমন রোগে আক্রান্তদের চিহ্নিত করতেই এই নতুন সমীক্ষার সূচনা করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলার সমীক্ষার কাজ শুরু হয়ে যাবে।’ এক স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, ‘আমরা যদি কমর্বিডিটি দিয়ে নাগরিকদের শনাক্ত করতে পারি তবে করোনায় দ্রুত আক্রান্ত হতে পারেন এমন লোকজনের খোঁজ মিলবে। আগে থেকে ব্যবস্থা নিয়ে আমরা মৃত্যুর হারও কমাতে পারব।’
উল্লেখ্য, আশা স্বেচ্ছাসেবীরা মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে এক সমীক্ষায় জানতে পেরেছেন, প্রায় ৮৫০০ রোগী শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর সমস্যায় ভুগছেন। ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় সমস্যায় আক্রান্ত প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষ।
করোনা চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশী রাজ্য বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা থেকে আগত রোগীদের এ রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এটি যাতে দ্রুত বন্ধ করা হয় তা নিশ্চিত করতেসাম্প্রতিক প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং সিএমওএইচ–দের নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ, এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মৃত্যুর হার অকারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী শ্রম দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন, করোনা ঠেকাতে পাটকল, চা বাগান–সহ কলকারখানা, শিল্প সংস্থায় সারপ্রাইজ ভিজিট করতে হবে। দেখতে হবে সে সব জায়গায় সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে কিনা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনও অভিযোগ উঠেছে যে কারখানা এবং অফিসগুলি থেকেই সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও নির্দেশ দিয়েছেন, করোনা রোগীদের মধ্যে যদি ৩ দিনের জন্য কোনও উপসর্গ না দেখা দেয় তবে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিতে হবে। এতে রোগীদের জন্য হাসপাতালের বেডও খালি হবে আর সুস্থতার হারও বাড়বে।