ভারতের বনধের দ্বিতীয় দিন আজকে। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সোমবার এবং মঙ্গলবার ভারত বনধের ডাক দেয় কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ ফোরাম। কেন্দ্রের ‘শ্রমিক বিরোধী, কৃষক বিরোধী, মানুষ বিরোধী এবং দেশবিরোধী নীতির’ বিরুদ্ধে মানুষকে প্রতিবাদে নামার আর্জি জানানো হয় ফোরামের তরফে। বনধের সমর্থনে প্রথম দিন রাস্তায় নেমেছিল বাম কর্মী-সমর্থকরা। ব্যাহত হয়েছিল ব্যাঙ্ক পরিষেবা। রেল অবরোধে যাত্রীদের পোহাতে হয়েছিল দুর্ভোগ। এই আবহে আজকে বনধের দ্বিতীয় দিন।
কোচবিহারে পুলিশের সাথে ধ্বস্তাধস্তি বনধ সমর্থনকারীদের
কোচবিহারে পুলিশের সাথে ধ্বস্তাধস্তি বনধ সমর্থনকারীদের। ঘটনায আটক বেশ কয়েকজন বনধ সমর্থক। কোচবিহার কাছারি মোড় এলাকায় বনধের সমর্থনে মিছিল চলাকালীন এসইউস আইয়ের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক গন্ডগোল হয়৷ আর তার জেরেই আটক বেশ কয়েকজন বন্ধ সমর্থক।
বালি হল্টে ফুটবল বনধ সমর্থনকারীদের
৪৮ ঘণ্টা ভারত বনধের দ্বিতীয় দিনে বনধ সফল করতে অভিনব উপায় বাছল বাম কর্মী সমর্থকরা। আজ দুই নম্বর জাতীয় সড়কের সামনে বালি হল্ট অবরোধ করে বামপন্থী সমর্থকরা। অবরোধের মধ্যেই রাস্তায় ফুটবল নিয়ে খেলতে দেখা গেল বনধ সমর্থনকারীদের। রাস্তা অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয় নিশ্চিন্দ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। তারা এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়। প্রায় আধ ঘণ্টা বালি হল্ট সংলগ্ন ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে বনধ সমর্থকেরা। ২ নম্বর জাতীয় সড়কে তীব্র যানযট সৃষ্টি হয় এই অবরোধের জেরে। দুর্ভোগে পড়ে অফিস যাত্রীরা।
বাঘাযতীন মোড়ে পথ অবরোধ
এদিন সকালে বাঘাযতীন মোড়ে পথ অবরোধও করেন বনধ সমর্থনকারীরা। সিপিএম নেতা সুদীপ সেনগুপ্তর নেতৃত্বে মিছিলও বের হয় এলাকায়। এদিকে কসবায় বনধ সমর্থনকে ঘিরে ঝামেলা বাঁধে।
বারাসতে সাময়িক অবরোধ
ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই পথ অবরোধ করে বারাসত কলোনি মোড় চত্বরে। পরে বারাসত থানার পুলিশ এসে ধর্মঘটীদের হটিয়ে দেয় সেখান থেকে।
মেদিনীপুরে রাজ্য সড়ক অবরোধ
এদিকে সকালের দিকে মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের সুলতান নগর এলাকায় রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছিল সিপিএম। এর জেরে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছিল এলাকায়।
'রাস্তায় নেই বনধ সমর্থনকারী, নেই মানুষও '
জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার, ধূপগুড়িতে সকাল থেকে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। এদিকে বেসরকারি বাসের দেখা মেলেনি। তবে ধর্মঘট সমর্থনকারীদের রাস্তায় সেভাবে দেখা যায়নি।
মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের লাঠিচার্জ
মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ডে বনধ সমর্থনকারীদের হঠাতে লাঠিচার্জ পুলিশের। তিন ধর্মঘট সমর্থনকারীকে সেখান থেকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
‘ভারত বনধ’ নিয়ে আলোচনা করার জন্য সংসদে মুলতুবি প্রস্তাব
কংগ্রেস সাংসদ শক্তিসিংহ গোহিল মঙ্গলবার রাজ্যসভায় বিভিন্ন সরকারী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা ‘ভারত বনধ’ নিয়ে আলোচনা করার জন্য বিজনেস নোটিশের মুলতুবি প্রস্তাব করেছেন। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে শ্রম কোড বাতিল করা, কোনও ধরণের বেসরকারীকরণ না করা, ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন (এনএমপি) বাতিল করা, বরাদ্দ বাড়ানো, MNREGA (মহাত্মা গান্ধী গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি আইন)-এর অধীনে মজুরি এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের রেগুলার করা।
পশ্চিমবঙ্গে প্রথমদিন সেভাবে প্রভাব পড়েনি বনধের
দু'দিনের ভারত বনধে পশ্চিমবঙ্গে প্রথমদিন সেভাবে প্রভাব পড়েনি। কয়েকটি জায়গায় বনধ সমর্থনকারীরা রাস্তায় নামেন। অবরোধ করেন। পুলিশ এসে পরে ধর্মঘটীদের হটিয়ে দেয়। তবে সার্বিকভাবে জনজীবন স্বাভাবিক ছিল গতকাল। ভারতের অন্যান্য প্রান্তে অবশ্য বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে। কোথাও বনধের একেবারেই কোনও প্রভাব চোখে পড়েনি। কোথাও আবার রাস্তাঘাট বেশ শুনশান দেখিয়েছে। ব্যাঙ্কিং পরিষেবা অবশ্য প্রভাবিত হয়েছে এই বনধের জেরে। আজও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ব্যাহত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।