ঠিক যেন রুপকথার গল্পগুলো গুছিয়ে লিখে চলেছেন তিনি। তাই তো তিনি কিং কোহলি। একের পর এক রেকর্ড। স্তূপ জমে গিয়েছে। কোন রেকর্ডটা নেই বিরাট কোহলির ঝুলিতে? ভাবতে বসলে একটাই নাম সামনে আসে। তিনি সচিন তেন্ডুলকর।
সচিনের মোট ১০০টি সেঞ্চুরির নজির কোহলি কি স্পর্শ করতে পারবেন? তা নিয়ে প্রতি দিনই জল্পনা চলছে। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তির ৪৯টি ওডিআই সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করাটা এখন বিরাট কোহলির কাছে শুধুই যেন সময়ের অপেক্ষা। সোমবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে কোহলি তাঁর ওডিআই ক্যারিয়ারের ৪৭তম সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। তাও মাত্র ২৬৭ ইনিংসে। সচিন ৪৩৫টি ইনিংস খেলে ৪৭তম ওডিআই সেঞ্চুরি করেছিলেন। সচিনের চেয়ে ১৬৮টি ইনিংস কম নিয়েছেন কোহলি। সেই সঙ্গে তিনি দ্রুততম ৪৭টি ওডিআই সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন। কোহলির মোট সেঞ্চুরির সংখ্যা দাঁড়াল ৭৭টি। সচিনের শতরানের সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করতে হলে, আরও ২৩টি সেঞ্চুরি করতে হবে বিরাট কোহলিকে।
আরও পড়ুন: কব্জি ব্যবহার করে শাদাবকে লম্বা ছক্কা- রাহুলের স্ট্রোকপ্লে দেখে হাঁ রোহিত-কোহলি- ভিডিয়ো
এখানেই শেষ নয়, একই সঙ্গে এক দিনের ক্রিকেটে ১৩ হাজার রান হয়ে গেল কোহলির। দ্রুততম ব্যাটার হিসাবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন তিনি। কোহলিই একমাত্র প্লেয়ার, যিনি দ্রুততম ৮ হাজার (১৭৫ ইনিংস) ৯ হাজার (১৯৪), ১০ হাজার (২০৫), ১১ হাজার (২২২), ১২ হাজার (২৪২) এবং ১৩ হাজার (২৬৭) রান করার নজির গড়েছেন। মানে যত রানের পরিমাণ বেড়েছে, রেকর্ডের উপর কোহলির দখলও বেড়েছে।
রবিবার ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন কোহলি। সোমবার রিজার্ভ ডে-তে খেলা শুরু হলে কেএল রাহুল এবং কোহলি আগ্রাসী মেজাজেই শুরু করেন। প্রথমে রাহুল চালিয়ে খেলতে শুরু করেন। তার পর সেই পথে হাঁচেন কোহলিও। দুই তাকার দাপটে একেবারে কেঁপে যান পাকিস্তানের বোলাররা। শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহরা কোহলির আগ্রাসনের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের কপাল পুড়িয়ে রিজার্ভ ডে-তে মাঠে নেই রউফ, কারণটা কী?
রাহুল আর কোহলি একেবারে তালে তাল মিলিয়ে ব্যাট করছিলেন। কাকে আটকাবেন বাবর আজম? ভেবে কোনও উপায় পাচ্ছিলেন না তিনি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভারতের দুই তারকার কাছে শাহিনদের আত্মসমর্পণ দেখা ছাড়া তাঁর যেন সেই সময়ে কিছুই করার ছিল না। কারণ কোনও স্ট্র্যাটেজি কাজ করেনি কোহলি-রাহুলের সামনে।
এদিনের শতরানের হাত ধরে কোহলি কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টানা চারটি শতরান করে ফেললেন। একটি স্টেডিয়ামে টানা সবচেয়ে বেশি শতরানের ক্ষেত্রে হাসিম আমলার সঙ্গে যুগ্ম ভাবে এক নম্বরে উঠে এলেন কোহলি। এর আগে কলম্বোর এই মাঠে ২০১৭ সালে দু’টি এবং ২০১২ সালে একটি শতরান করেছিলেন কোহলি।
কোহলি-রাহুল মিলে তৃতীয় উইকেটে অপরাজিত ২৩৩ রান যোগ করেন। ভারত নির্দিষ্ট ৫০ ওভারে ২ উইকেট হরিয়ে করে ৩৫৬ রান। কোহলি শেষ পর্যন্ত ৯৪ বলে অপরাজিত ১২২ রানের ঝোড়ে ইনিংস খেলেন। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ৯টি চার এবং ৩টি ছক্কা। কেএল রাহুল তাঁর কামব্যাক ম্যাচে অপরাজিত থাকেন ১০৬ বলে ১১১ করে। মারেন ১২টি চার এবং ২টি ছক্কা।