ডিআরএস (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) বিতর্ক এবার পৌঁছে গেল উইমেন্স প্রিমিয়র লিগেও। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ইউ ওয়ারির্সের চামারি আতাপাত্তুর ক্ষেত্রে ডিআরএস যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তুমুল উষ্মাপ্রকাশ করেছেন ইউপি ওয়ারির্সের কোচ জন লুইস। রীতিমতো বিরক্তির সুরে তিনি প্রশ্ন করেন, কীভাবে ডিআরএসে আতাপাত্তুকে আউট দেওয়া হতে পারে? যে কায়দায় তাঁকে আউট দেওয়া হয়েছে, সেটা চূড়ান্ত বিরক্তিকর। প্রযুক্তির এরকম কীর্তি দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি। তবে শুধু ইউপি ওয়ারির্সের কোচ নন, ডিআরএসের সেই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে গিয়েছেন ধারাভাষ্যকাররাও। তাঁদের বক্তব্য, যে বলটা পড়ার সময় লেগস্পিন ছিল, সেটা ডিআরএসে গুগলির মতো ঘুরেছে বলে দেখিয়ে দেওয়া হল।
আর যে ঘটনা নিয়ে এত বিতর্ক, তা ওয়ারির্সের ইনিংসের সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে হয়েছে। ব্যাঙ্গালোরের ১৯৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে কিরণ নাভগিরে আউট হওয়ার পরে ক্রিজে আসেন আতাপাত্তু। ৬.৩ ওভারে লেগস্টাম্পে থাকা জর্জিয়া ওয়ারহ্যামের ফুল বলটা 'অ্যাক্রস দ্য লাইন' খেলতে যান শ্রীলঙ্কার তারকা। কিন্তু ব্যাটের সঙ্গে বলের কোনও সংযোগ হয়নি। প্যাডে আছড়ে পড়ে বল। এলবিডব্লুউয়ের জন্য জোরালো আবেদন করেন আরসিবির খেলোয়াড়রা। তবে আউট দেননি অনফিল্ড আম্পায়ার।
আরও পড়ুন: WPL 2024: ছয় মেরে ভেঙে দিলেন গাড়ির জানলা! দেখেছেন কি পেরির কাঁচ ভাঙা ছক্কার এই ভিডিয়ো
যদিও রিচা ঘোষ একেবারে নিশ্চিত ছিলেন যে আতাপাত্তু আউট ছিলেন এবং আরসিবি অধিনায়ক স্মৃতি মন্ধনাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। রিচার কথায় শেষপর্যন্ত রিভিউ নেন স্মৃতি। হক-আইয়ের মাধ্যমে রিভিউয়ে দেখা যায়, লেগস্টাম্পের লাইনে বলটা পড়েছে। আর সেখান থেকে বলটা মিডল স্টাম্পে আছড়ে পড়ছে। সেই পরিস্থিতিতে অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পালটে দেওয়া হয়। আউট দেওয়া হয় আতাপাত্তুকে। কিন্তু হতবাক হয়ে যান শ্রীলঙ্কার তারকা ক্রিকেটার।
শুধু তিনি নন, ক্রিজের অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা ওয়ারির্সের ক্যাপ্টেন অ্যালিসা হিলিসাকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা হতেই পারে না।’ এমনকী আরসিবির খেলোয়াড়দের চোখে-মুখেও কিছুটা অবিশ্বাসের অভিব্যক্তি ধরা পড়ে। কারণ লেগস্পিনারের ক্ষেত্রে লেগস্টাম্পে বল পড়ে সেটি উলটোদিকে ঘুরে কীভাবে মিডল স্টাম্পে আছড়ে পড়তে পারে, সেটার রহস্য উদঘাটন করতে পারছিলেন না তাঁরাও। বলটা যদি গুগলি হত, তাহলে সেটা সম্ভব হত। কিন্তু লেগস্পিনের ক্ষেত্রে কীভাবে বলের গতিপথ ওরকম দেখানো হতে পারে, তা নিয়ে হতবাক হয়ে যান বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: WPL 2024: স্মৃতি-পেরির যুগলবন্দির সঙ্গে, বোলারদের মরণপণ লড়াই, UPW-কে ২৩ রানে হারাল RCB
সেই বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত বিরক্তিপ্রকাশ করেন ওয়ারির্সের কোচ। তিনি বলেন, 'খালি চোখে বলটা দেখুন। আপনার মনে হতে পারে যে বলটা লাইনে পিচ করেছে। স্রেফ একটুখানির জন্য। কিন্তু তারপর বলের ঘোরাটা দেখুন। বলটা লেগস্পিনের মতো ঘুরেছিল। খুব বেশি সংখ্যক লেগস্পিনার নেই, যাঁদের বল ওরকম জায়গা থেকে উলটো দিকে যেতে পারে। এটা আশ্চর্যজনক আউট। যা ম্যাচের নিরিখে বিশাল সিদ্ধান্ত।' সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি হক-আইয়ের বিষয়ে জানি না। কীভাবে কাজ করে, সেটা জানি না। কিন্তু ওটা ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। যা নিয়ে আমরা বেশ বিরক্ত।’
আর এমন একটা সময় সেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে, যখন ভারত-ইংল্যান্ডের পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজেও একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়েছে। রাজকোটে দ্বিতীয় টেস্টে জ্যাক ক্রলিকে এলবিডব্লুউ দেওয়া নিয়ে তুমুল উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। রাঁচিতে চতুর্থ টেস্টে জো রুটের আউটের ক্ষেত্রেও একইরকম বিতর্ক হয়েছিল। যদিও সেক্ষেত্রে হক-আইয়ের তরফে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে প্রযুক্তিতে কোনও ভুল ছিল না।