রবিবার বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট ভেন্যু, আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে, ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। চূড়ান্ত লড়াইয়ে টিম ইন্ডিয়াকে হারিয়ে ইতিহাসের বইতে নাম লিখিয়েছেন প্যাট কামিন্স অ্যান্ড কোম্পানি। যাইহোক, ভারতের জন্য এটি একটি প্রায় নিখুঁত বিশ্বকাপে পরিণত হয়েছিল কারণ দলটি ১০টি ম্যাচের মধ্যে 10টিতে জিতেছে। এর ফলে রোহিত শর্মারা ফাইনাল হারলেও দেশটিকে অত্যন্ত গর্বিত করেছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৮-০
ফের বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয় ভারত। ১৪ অক্টোবর, বাবর আজম ও কোম্পানিকে আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ১ লক্ষ ৩০ হাজা দর্শকের সামনে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয় টিম ইন্ডিয়া। এই ম্যাচে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের ব্যাটিং ভেঙে যায় এবং তারা ১৯১ রানে গুটিয়ে যায়। এই রান তাড়া করাটা ভারতের জন্য পার্কে হাঁটার মতো সহজ হয়েছিল কারণ অধিনায়ক রোহিত এটিকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ভারতীয় দল ম্যাচটি সাত উইকেটে জিতে যায়। এই জয়ের সঙ্গে, ভারত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে তাদের নিখুঁত রেকর্ড বজায় রাখে। ওডিআই বিশ্বকাপে ৮-০ এগিয়ে যায় ভারত।
হার্দিকের চোট আর শামির এন্ট্রি-
অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া লিগ ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বোলিং করার সময় চোট পান এবং তিনি টুর্নামেন্টের মাঝপথেই ছিটকে যান। সেই সময়ে সুযোগ পান মহম্মদ শামি। যদিও হার্দিকের চোট গ্রুপ-পর্যায়ের যাত্রার মাঝখানে ভারতের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। তবু শামি তার জায়গায় এসে ম্যাজিক পারফরমেন্স করতে থাকেন। শামি, তারপর থেকে নিউজিল্যান্ড (দুইবার) এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তিনটি ফিফার নিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম ৫০ উইকেটের মালিকও হয়েছেন শামি।
বিরাট কোহলির ঐতিহাসিক শতরান
ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মুহূর্তগুলির মধ্যে একটি হল যখন বিরাট কোহলি ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিজের শতরানটি করেন। অবশ্যই এটি বিরাট কোহলির ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় মুহূর্তের মধ্যে একটি ছিল। প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর করা শতরানটি ছিল তাঁর কেরিয়ারের ৫০তম সেঞ্চুরি। এই সময়ে তিনি কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরের সর্বাধিক ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ডকে টপকে যান। এরপরে সচিনের কাছে নত হয়েছিলেন কোহলি। এর ফলে বিশ্বের কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। গোটা টুর্নামেন্টে বিরাট কোহলি একাই ৭৬৫ রান করেছিলেন।
বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় জয়
মহম্মদ শামি বিশ্বকাপে ভারতের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকার-ইন-চিফ হয়ে উঠেছেন। মুম্বইয়ে শ্রীলঙ্কাকে ৩০২ রানের বিশাল রেকর্ড ব্যবধানে হারিয়েছিল ভারত। শুভমন গিল, বিরাট কোহলি এবং শ্রেয়স আইয়ারের চকচকে অর্ধশতকের ফলে ভারতকে ৩৫৭/৮ রান তুলেছিল। জবাবে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা মাত্র ৫৫ রানে গুটিয়ে যায়। জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ সিরাজ এবং মহম্মদ শামির পেস ত্রয়ীর সামনে মাত্র ২০ ওভারেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। শামি লঙ্কান ব্যাটিং অর্ডারকে ধ্বংস করে দেন। ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে বড় বিশ্বকাপ জয়ের ম্যাচে দুরন্ত পারফর্ম করেন শামি। ১৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত নকআউট ম্যাচে কিউয়িদের হারাল ভারত
রোহিত শর্মার ভারত অবশেষে নকআউট পর্যায়ে কিউয়ি দলকে হারাল। আইসিসি নকআউট ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের হারের ধারার অবসান ঘটে। ২০০৩ সাল থেকে ব্ল্যাক ক্যাপদের বিরুদ্ধে নক-আউট ম্যাচে হেরেছিল ভারত। মুম্বইতে টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে সুদর্শন ৭০ রানের ব্যবধানে জিতেছিল ভারত। বিরাট কোহলির ঐতিহাসিক ৫০তম ওডিআই সেঞ্চুরির পর শ্রেয়স আইয়ারের ৭০ বলে ১০৫ রানের ঝোড়ো ইনিংসের সুবাদে ভারত ৪ উইকেটে ৩৯৭ রান করেছিল। কিউয়িরা শেষ পর্যন্ত ৩২৭ রান করে। এই জয়ের সঙ্গে ভারতও প্রতিশোধ নেয়। ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কিউয়িদের কাছে হেরেছিল ভারত।
এবারের টুর্নামেন্টে অরাজিতের তকমা মুছে গেল-
টু্র্নামেন্টের প্রথম দিকে বেশ সমস্যায় পড়েছিল চ্যাম্পিয়ন দল অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ভারত ও পরে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারে তারা। তবে এরপরে টানা জিততে থাকে প্যাট কামিন্সরা। অন্যদিকে টুর্নামেন্টের প্রথম থেকে চ্যাম্পিয়নের মতো খেলার পরে ফাইনালে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছিল রোহিত শর্মার ভারতকে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড বিস্তারিত ক্রীড়াসূচি - এর জন্য চোখুন HT Bangla - তে